ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: ডলার সংকট ও রিজার্ভের চাপের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার আয়ের প্রধান দুটি খাতেই দুঃসংবাদ এসেছে। দুই খাতই আগের প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি। সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় কমেছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। রেমিট্যান্স কমেছে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫৫ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। আমদানি ব্যয়ের চেয়ে রপ্তানি আয় কম হওয়ায় অর্থবছরের শুরুতেই বড় অঙ্কের এই বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) এ তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ১ হাজার ২৬৯ কোটি ২০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। তার বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৮১৩ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য। এতে ৪৫৫ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
গত জুলাই ও আগস্ট মাসে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতিও বেড়েছে। আগস্ট মাস শেষে সেবা খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ১৫১ কোটি ডলার। অন্যদিকে সেবা খাতে ব্যয় হয়েছে ২১৯ কোটি ডলার। এ খাতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৮ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৪৬ কোটি ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের দুই মাস শেষে চলতি হিসাবের ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫০ কোটি ২০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরে একই সময়ে এ ঘাটতি ছিল ১৪১ কোটি ২০ লাখ ডলার। অর্থাৎ গত অর্থবছরের চেয়ে চলতি অর্থবছরের ২ মাসে ঘাটতি বেড়েছে ৯ কোটি ডলার।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সাভার ও গাজীপুরের শিল্প এলাকায় তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে উৎপাদনে। অন্যদিকে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোয় মূল্যস্ফীতি অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। এ হার নিয়ন্ত্রণে দেশগুলো সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অনুসরণ করে বাজারে টাকার প্রবাহ কমাচ্ছে। এতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ভোক্তারা পোশাক কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি একাধিক খাতে পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়ায় পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এসব কারণে রপ্তানি আয় কমছে।
ইপিবি সূত্র জানায়, রপ্তানি আয় বাড়াতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেসব দেশ বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি অন্যান্য দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি কার্যক্রম শুরু করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী দিনে রপ্তানি আয় ও প্রবৃদ্ধি বাড়বে।