বেনাপোল বন্দরে ‘ওমিক্রন’ নিয়ে বাড়তি সতর্কতা বাড়ানোর নির্দেশনা থাকলেও গত সাত দিনেও দেশের বৃহৎ এই স্থলবন্দরে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। নেই কোনো সুরক্ষাব্যবস্থা। এতে ‘ওমিক্রন’ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মাস্ক, সেনিটাইজেশন ছাড়া ভারতীয় ট্রাকচালকরা অবাধে ঢুকছে বেনাপোল বন্দরে। তাদের কোনো স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হচ্ছে না প্রবেশমুখে। পণ্যবাহী ট্রাকে জীবাণুনাশক স্প্রে করারও কোনো ব্যবস্থা নেই বন্দরে।
তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, করোনা কমে আসায় স্বাস্থ্যবিধি শিথিল করা হয়েছিল। তবে নতুন করে স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনে যাত্রী যাতায়াতের ক্ষেত্রে থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা আর করোনা নেগেটিভ সনদ গ্রহণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে স্বাস্থ্য বিভাগের কার্যক্রম। তবে ওমিক্রন সংক্রমিত দেশ থেকে কেউ এলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে জানান স্বাস্থ্য বিভাগ।
ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাতায়াত করেছেন ১৩ হাজার ৮০ জন দেশি-বিদেশি পাসপোর্টযাত্রী। এর মধ্যে ভারতে গেছেন সাত হাজার ৪২১ জন ও ভারত থেকে এসেছেন পাঁচ হাজার ৬৫৯ জন। এর আগের সপ্তাহে ভারতে যাতায়াত করেছেন ১১ হাজার ৮০৭ জন পাসপোর্টযাত্রী। এর মধ্যে ভারতে গেছেন পাঁচ হাজার ৯৯৩ জন ও ভারত থেকে এসেছেন পাঁচ হাজার ৮১৪ জন।
তবে এখানে বর্তমানে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় কর্তৃপক্ষের খুব একটা পদক্ষেপ না থাকায় ঝুঁকি বাড়ছে ‘ওমিক্রন’ সংক্রমণের। তিন মাস আগেও বেনাপোল বন্দরে করোনা সংক্রমণ রোধে জোরদার ছিল সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা। তবে মাঝে সংক্রমণ কমে আসায় সুরক্ষা ব্যবস্থা শিথিল করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থাও তুলে দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ।
শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইউসুফ আলী জানান, আফ্রিকা মহাদেশ থেকে আগত যাত্রীদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যদিও এখনো আফ্রিকা মহাদেশ থেকে কোনো যাত্রী বেনাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে আসেনি। করোনা সংক্রমিত দেশ থেকে ফিরলেই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে যাত্রীদের। ভারত-বাংলাদেশ পাসপোর্টযাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয় ও করোনা সনদ পরীক্ষা করা হচ্ছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজু আহমেদ বলেন, ভারত থেকে আসা প্রত্যেক যাত্রীকে ইমিগ্রেশন কাউন্টারে প্রবেশের আগে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যেসব যাত্রী মাস্কবিহীন বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন তাদের মধ্যে ফ্রি মাস্ক সরবরাহ করা হচ্ছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) সঞ্জয় বাড়ৈ বলেন, করোনা সংক্রমণ কমে আসায় বন্দরে স্বাস্থ্যবিধি শিথিল করা হয়েছিল। আবারও জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোতে জীবাণুনাশক স্প্রে করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে জরুরিভিত্তিতে। ট্রাকচালক ও হেলপারদের মাস্ক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।