ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: রমজানে তেল, চিনি, ছোলাসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে খুচরা ও পাইকারি ব্যবাসয়ী, উৎপাদনকারী, আমদানিকারক ও বাজার কমিটিগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রমজান উপলক্ষে নিত্যপণ্যের আমদানি, মজুত, সরবরাহ, বাজার পরিস্থিতি ও বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
তিনি বলেন, বাজার স্থিতিশীল রাখতে এরইমধ্যে সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এক্ষেত্রে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের দায়িত্বশীল হতে হবে। ভোক্তাদের যেমন- প্রয়োজনের অতিরিক্ত কেনাকাটা থেকে বিরত থাকতে হবে, ব্যবসায়ীদেরও অতি মুনাফা করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
কোনো ব্যবসায়ী যেন ভোক্তাদের কাছ থেকে পণ্যের অযৌক্তি দাম আদায় করতে না পারে, সে বিষয়ে বাজার কমিটিগুলোকে তৎপর থাকার আহ্বান জানিয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা চাই না ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ীদের হেনস্তা করুক। পণ্য ক্রয়-বিক্রয় ও মজুত বিষয়ে সরকারের নিয়ম-নীতি রয়েছে। এসব বিষয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীদের সচেতন করতে বাজার কমিটিগুলো উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কোনো পণ্যের সরবরাহ বিঘ্নিত হলে আমাদেরকে জানান, সহযোগিতা করবো।’
কোনো বাজারে অযৌক্তিক মূল্যে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় হলে এবং এ বিষয়ে বাজার কমিটির উদাসীনতা দেখা গেলে সরকার কমিটির লাইসেন্স বাতিল করবে জানিয়ে সবাইকে সতর্ক করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এফবিসিসিআইয়ে সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্য যা বাড়ার, তা বেড়েছে। রমজানকে কেন্দ্র করে এই দাম যেন নতুন করে না বাড়ে। আমরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জেনেছি চিনি, ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। পাইপলাইনেও (আমদানি পর্যায়ে) যথেষ্ট পণ্য রয়েছে। গত বছর ঈদের আগে বাজারে যে বিশৃঙ্খলা হয়েছিল, এবার যেন তার পুনরাবৃত্তি না হয়।’
ব্রয়লার, গরুর মাংস ও ডিমের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে সরকার মাংস ও ডিম আমদানির চিন্তাও করতে পারে। এতে করে স্থানীয় শিল্প হুমকিতে পড়বে। এফবিসিসিআই সেটা চায় না বলেই সবাইকে নিয়ে মতবিনিময় সভায় বসেছে।’ এসময় অসাধু ব্যবসায়ীদের দায় এফবিসিসিআই নেবে না বলেও সভায় জানান তিনি।
মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে ভোজ্যতেল ও চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা জানান, রমজারে চাহিদার বিপরীতে দেশে পণ্য দুটির পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। কারখানা পর্যায়ে জ্বালানি সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে এসব পণ্যের কোনো ঘাটতি হবে না।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, নিত্যপণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে পাইকারি বাজার কিংবা মিলগেট থেকে রশিদ প্রদান না করায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। আড়ত ও মিলগেটে পণ্য কেনাবেচার ক্ষেত্রে রশিদ বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি বাস্তবায়নে সরকারের সঙ্গে জোরালোভাবে কাজ করা হবে বলে জানিয়েছে এফবিসিসিআই।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি এম এম মোমেন, মো. আমিন হেলালী, পরিচালক এম জি আর নাসির মজুমদার, বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, হাফেজ হারুন, মোহাম্মদ বজলুর রহমান, আবু হোসেন ভূইয়াঁ রানু, আক্কাস মাহমুদ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিনসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতারা।