ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: বিশ্ব অর্থনীতি এখন মন্দার মুখে। করোনার অভিঘাত, রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ, জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতার মতো বড় ঘটনায় বিশ্ব অর্থনীতি সংকুচিত হয়ে আসছে। যে হারে এ বছর বিশ্ব অর্থনীতি বাড়বে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, তা কমিয়ে এনেছে বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফের মতো বহুজাতিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশ্ব অর্থনীতির এ অবস্থার অভিঘাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও পড়ছে। আরও অবনতি হলে বাংলাদেশের জন্য মূল উদ্বেগের জায়গা হবে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স। রপ্তানি ও রেমিট্যান্স কমে গেলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে আরও পতন হবে। এতে টাকার মান কমে আমদানি ব্যয়ে বাড়তি চাপ তৈরি হবে।
বৈশ্বিক অস্থিরতায় ভোক্তা পর্যায়ে ভোগ ক্ষমতা কমছে। এতে প্রায় সব দেশেরই রপ্তানি কমছে। গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের রপ্তানিতে গতি কমেছে। গত সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আগের বছরের একই মাসের চেয়ে সাড়ে ৬ শতাংশ কম হয়েছে। প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের রপ্তানি কম হয়েছে ৭ শতাংশ। রেমিট্যান্সও গত মাসে কমেছে। বেশ কয়েকজন রপ্তানিকারক উদ্যোক্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন রপ্তানি আদেশ এখন কম। এর চেয়েও বড় সমস্যা, উৎপাদিত পণ্য বুঝে নিচ্ছে না অনেক ক্রেতা এবং ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠান। কারখানায় এসব পণ্য মজুদ করে রাখা বাড়তি ঝামেলা এবং অতিরিক্ত ব্যয় গুনতে হচ্ছে। আবার সরাসরি রপ্তানি আদেশ বাতিল করেছে কিছু ক্রেতা এবং ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠান। এতে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধসহ পরিচালন ব্যয় নিয়ে সংকটে আছে বেশ কিছু কারখানা কর্তৃপক্ষ।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান মনে করেন, বৈশ্বিক মন্দায় দেশের রপ্তানি খাতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সমকালকে তিনি বলেন, এ রকম একটা পরিস্থিতি যে অপেক্ষা করছে- সে কথা চার মাস আগে থেকেই বলে আসছেন তাঁরা। কিন্তু কেউ তেমন আমলে নেয়নি। গত মাসে রপ্তানি কমে গেছে। আগামীতেও কমার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। বৈশ্বিক পরিস্থিতির আশানুরূপ পরিবর্তন না এলে পরের মৌসুম অর্থাৎ নতুন বছরের রপ্তানি নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার সুযোগ নেই।