ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: দরপতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। এক কার্যদিবস কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর বুধবার আবার শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই দরপতন হলো।
দরপতনের সঙ্গে শেয়ারবাজারে প্রকট হয়ে উঠেছে ক্রেতা সংকট। এতে কমেছে লেনদেনের গতি। একই সঙ্গে দিনের লেনদেনের পুরো সময় ক্রেতাশূন্য পড়ে থাকছে সিংহভাগ প্রতিষ্ঠান। ক্রেতা সংকটে পড়ে অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকে রয়েছে।
ক্রেতা সংকটে পড়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) নতুন করে আরও ১১ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম ফ্লোর প্রাইসে এসে ঠেকেছে। এতে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকে।
এমন বিপুল সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকার পাশাপাশি বাজারটিতে সবকয়টি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। পাশাপাশি দাম বাড়ার তালিকায় যে কয়টি প্রতিষ্ঠান স্থান করে নিয়েছে, দরপতন হয়েছে তার চারগুণের বেশি।
ডিএসই’র পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) মূল্যসূচক কমেছে। একই সঙ্গে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি এ বাজারটিতেও লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। লেনদেনের প্রথম এক ঘণ্টা সূচকের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে। তবে দুপুর ১২টার পর থেকে বাজার পরিস্থিতি বদলে যেতে থাকে। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দরপতনের তালিকায় নাম লেখাতে থাকে।
দুপুর ১টার পর দরপতনের প্রবণতা আরও বেড়ে যায়। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে মাত্র ১৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮২টির এবং ২১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৬ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২০৬ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২১৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩২৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৪৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ২১ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারির পর ডিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেন হলো।
টাকার অঙ্কে বাজারটিতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৯ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেনেক্স ইনফোসিসের ১৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- আরডি ফুড, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, শাইনপুকুর সিরামিকস, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, আমরা নেটওয়ার্ক এবং জেমিনি সি ফুড।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১২৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৩টির এবং ৬৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২ কোটি ২৯ লাখ টাকা।