ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (৯ জানুয়ারি) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। তবে এ পতনের বাজারেও চার কোম্পানির শেয়ার দিনের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে। এমনকি এক পর্যায়ে এ চার কোম্পানির শেয়ারের বিক্রেতাও উধাও হয়ে যান।
এর আগে নতুন বছরের প্রথম পাঁচ কার্যদিবস শেয়ারবাজার টানা ঊর্ধ্বমুখী থাকে। এতে বছরের প্রথম সপ্তাহেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ২৩০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। আর বাজার মূলধন বাড়ে ১৫ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা।
এ পরিস্থিতিতে বছরের দ্বিতীয় সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে ডিএসইতে লেনদেন শুরু হতেই প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩১ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টা অব্যাহত থাকে।
কিন্তু দুপুর ১২টার পর থেকে বদলে যেতে থাকে চিত্র। লেনদেনের শুরুতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর একের পর এক দরপতন হতে থাকে। লেনদেনের শেষ আড়াই ঘণ্টাজুড়েই চলতে থাকে এ পতনের ধারা। ফলে সূচকের বড় পতনের মধ্য দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৪ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৯৩২ পয়েন্টে নেমেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৫৭৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৪৬৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৪৬১ কোটি আট লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ৬৮৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ২২২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। বাজারটিতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৯৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৮টির। আর ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিন বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হলেও চারটি কোম্পানির চিত্র ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। এ চার কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, বসুন্ধরা পেপার মিল, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং রংপুর ফাউন্ড্রি। এ চার প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম দিনের লেনদেন শুরুর অল্প কয়েক মিনিটের মধ্যে সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে যায় এবং লেনদেনের শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। ফলে লেনদেনের প্রায় সম্পূর্ণ সময় ধরেই এ চার কোম্পানির বিক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকে।
এদিকে সূচকের বড় পতনের বাজারে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১০৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৮০ কোটি ৫৫ লাখ এবং তৃতীয় স্থানে থাকা ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬০ কোটি ১৯ টাকার।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, পাওয়ার গ্রিড, ফরচুন সুজ, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সাইফ পাওয়ার টেক এবং পেনিন সুলা চিটাগাং।
একইদিন অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৮৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪০ কোটি ৫২ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩০৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯৪টির এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।