ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল বন্দরের ছয় ক্রেনের তিনটিই অচল হয়ে পড়ে আছে। আর এতে ব্যাহত হচ্ছে পণ্য লোড-আনলোড বা ওঠানো-নামানোর কাজ। স্থবির হয়ে পড়েছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। আটকে আছে আমদানি পণ্যবোঝাই শত শত ট্রাক। সৃষ্টি হয়েছে জটের।
এমন পরিস্থিতে ক্রেন ও ফরক্লিপের দাবিতে আগামী ১৭ মে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দিন গাজী।
তিনি জানান, বেনাপোল বন্দর দেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ হওয়া সত্ত্বেও এখানে ভারী পণ্য ওঠানো-নামানোর জন্য পর্যাপ্ত ক্রেন ও ফরক্লিপ নেই। আর যেগুলো আছে তার মধ্যে কয়েকটা ভালো থাকলেও পণ্য খালাস করতে গিয়ে বারবার নষ্ট হয়ে যায়। এ ক্রেন ও ফরক্লিপ চালকরাও অদক্ষ। ফলে এ বন্দরে আমদানিকৃত ভারি পণ্য খালাস করতে দীর্ঘদিন সময় লেগে যাচ্ছে।
এতে ব্যবসায়ীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে এ বন্দর থেকে। যার ফলে আগামী ১৭ মে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে ১০ হাজার মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। এর মধ্যে চার হাজার টন পণ্য ইকুইপমেন্ট বা ক্রেনের মাধ্যমে লোড-আনলোড হয়ে থাকে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাক বেঙ্গল এন্টারপ্রাইজ এ কাজ করে।
প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ছয়টি ক্রেন সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু অর্ধেকই অর্থাৎ তিনটিই নষ্ট হয়ে অচল পড়ে আছে। বাকি তিনটি দিয়ে কার্যক্রম সচল রাখার চেষ্টা করলেও সেগুলোও আবার মাঝেমধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া ১০টি ফরক্লিপের মধ্যে ৮টি অচল রয়েছে। এতে বন্দরে লোড-আনলোড প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে পড়েছে।
বেনাপোল বন্দরে ক্রেন ও ফরক্লিপ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ব্লাক বেঙ্গল এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মিল্টন জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে বর্তমানে অধিক পরিমাণে পিডিপি (বিদ্যুৎ টাওয়ারের মালামাল) অ্যাঙ্গেল আমদানি হচ্ছে। এতে এ টিটিবি অ্যাঙ্গেল ওঠাতে ও নামাতে গিয়ে তাদের বেশ কিছু ক্রেন ও ফরক্লিপের যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়েছে। ফলে পণ্য ওঠাতে-নামাতে সমস্যা হচ্ছে। খুব দ্রুত আরো ২টি ক্রেন আনা হবে।
বেনাপোল বন্দরের ডেপুটি পরিচালক মামুন তরফদার বলেন, বন্দরে ক্রেনের মাধ্যমে পণ্য লোড-আনলোডের পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রেন-ফরক্লিপের সমস্যার কারণে বন্দরে পণ্য লোড-আনলোড সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি আমরা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে জানিয়েছি। তারা ক্রেনের সংখ্যা বাড়ালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।