ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সরবরাহ অব্যাহত রাখতে পৃথক দুটি আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ১ লাখ মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৪২৩ কোটি ৭৬ লাখ ২ হাজার ৭৫০ টাকা। সিঙ্গাপুর ও ভারতের দুটি প্রতিষ্ঠান এসব চাল সরবরাহ করবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য দেশে মোট চালের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ লাখ মেট্রিক টন। ক্রয় পরিকল্পনা অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে ৭ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল জি-টু-জি ভিত্তিতে ক্রয় করা হয়েছে। বাকি আছে ২ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন। প্যাকেজ-২ এর আওতায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন এবং প্যাকেজ-৩ এর আওতায় আরও ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্যাকেজ-২ এর আওতায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল ক্রয়ের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হলে চারটি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। এর মধ্যে ভারতের মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড তাদের দরপ্রস্তাবে প্রতি মেট্রিক টন চালের দাম ৩৯৩ দশমিক ১৯ ডলার উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে রেসপন্সিভ হয়। এছাড়া, সিঙ্গাপুরভিত্তিক মেসার্স অ্যাগ্রোকরপ ইন্টান্যশনাল প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি মেট্রিক টন চালের দাম ৪০১ দশমিক ৫৫ মার্কিন ডলার উল্লেখ করে দ্বিতীয়, ভারতের মেসার্স হালদার ভেঞ্চার লিমিটেড ৪০৭ দশমিক ৭৯ মার্কিন ডলার উল্লেখ করে তৃতীয় এবং ভারতের অপর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান প্রতি মেট্রিক টনের দাম ৪২৭ মার্কিন ডলার উল্লেখ করে চতুর্থ স্থান অধিকার করে।
সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড ভারতীয় উৎস থেকে চাল সরবরাহ করবে। তাদের উল্লেখিত দর প্রতি মেট্রিক টন ৩৯৩ দশমিক ১৯ মার্কিন ডলার। এই ৫০ হাজার মেট্রিক টন চালের দাম পড়বে ১ কোটি ৯৬ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২১০ কোটি ৩৫ লাখ ৬৬ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে ৪২ টাকা ০৭ পয়সা।
প্যাকেজ-৩ এর আওতায় দরপত্র আহ্বান করা হলে তিনটি দরপত্র জমা পড়ে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরভিত্তিক মেসার্স অ্যাগ্রোকরপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি মেট্রিক টন চালের দাম ৩৯৭ দশমিক ০৩ ডলার উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা নির্বাচিত হয়। এছাড়া, ভারতের মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি মেট্রিক টনের দাম ৪০০ দশমিক ০১ ডলার উল্লেখ করে দ্বিতীয় এবং মেসার্স হালদার ভেঞ্চার লিমিটেড ৪২৮ দশমিক ৯৪ ডলার উল্লেখ করে তৃতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা হয়।
মেসার্স অ্যাগ্রোকরপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড ভারতীয় উৎস থেকে চাল সরবরাহ করবে। তাদের উল্লেখিত দর প্রতি মেট্রিক টন ৩৯৭ দশমিক ০৩ মার্কিন ডলার (প্রতি কেজি ৪২ টাকা ৬৮ পয়সা)। বাজারদর যাচাই কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রাক্কলিত গড়মূল্য ৪২৯ দশমিক ২৭ মার্কিন ডলার অপেক্ষা ৩২ দশমিক ২৪ ডলার কম হওয়ায় তা গ্রহণ করার জন্য দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সুপারিশ করে।
প্রতি মেট্রিক টন ৩৯৭ দশমিক ০৩ মার্কিন ডলার হিসেবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল কিনতে ব্যয় হবে ১ কোটি ৯৮ লাখ ৫১ হাজার ৫০০ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২১৩ কোটি ৪০ লাখ ৩৬ হাজার ২৫০ টাকা।
প্যাকেজ-২ এর তুলনায় প্যাকেজ-৩ এ প্রতি মেট্রিক টন চল আমদানিতে ৩ দশমিক ৮৪ ডলার বেশি ব্যয় হবে।
অর্থাৎ দুটি প্যাকেজে ১ লাখ মেট্রিক টন নন-বাসমতি চাল আমদানিতে ব্যয় হবে ৪২৩ কোটি ৭৬ লাখ ২ হাজার ৭৫০ টাকা। এ সংক্রান্ত পৃথক দুটি প্রস্তাবে অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে।