ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: দেশের ২২ খাতে বিনিয়োগ ও দান করলে একজন করদাতা আয়করের ক্ষেত্রে কর ছাড় কিংবা কর রেয়াত সুবিধা পাচ্ছেন। করদাতা তার মোট বার্ষিক আয়ের ২০ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ বা দানের ক্ষেত্রে এমন সুবিধা পাবেন।
আয়কর নির্দেশিকা ২০২২-২০২৩ অনুসারে নির্ধারিত সময় ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করলেই ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কর রেয়াত মিলবে। এরপরে রিটার্ন দাখিল করলে করছাড় কমে অর্ধেক বা ৭.৫ শতাংশ হয়ে যাবে। আর এই শর্ত কেবলমাত্র পুরোনো করদাতা যিনি এর আগে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন তার জন্য প্রযোজ্য হবে।
এনবিআর থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, একজন বিনিয়োগকারী বা দানশীল করদাতার মোট করযোগ্য আয় নির্বিশেষে রেয়াতযোগ্য অংকের ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর রেয়াতের বিধান করা হয়েছে।
একজন করদাতার বার্ষিক আয়, ব্যয় ও সম্পদের তথ্যাবলী নির্ধারিত ফরমে উপস্থাপন করতে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হয়। আয়কর আইন অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্ধারিত ফরমে বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা দেওয়ার সময় যথাযথভাবে হিসাব-নিকাশ করে এমন সুযোগ গ্রহণ করা যাবে।
আয়কর নির্দেশিকা অনুসারে একজন করদাতার বিনিয়োগ ও দানের খাতগুলো হলো:
জীবন বিমার প্রিমিয়াম, সরকারি কর্মকর্তার প্রভিডেন্ট ফান্ডে চাঁদা, স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিলে নিয়োগকর্তা ও কর্মকর্তার চাঁদা, কল্যাণ তহবিল ও গোষ্ঠী বিমা তহবিলে চাঁদা, সুপার এনুয়েশন ফান্ডে প্রদত্ত চাঁদা, যেকোনো তফসিলি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ডিপোজিট পেনশন স্কিমে বার্ষিক সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা বিনিয়োগ, সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে বিনিয়োগ, বাংলাদেশের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার, স্টক, মিউচ্যুয়াল ফান্ড বা ডিবেঞ্চারে বিনিয়োগ, বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ, জাতির জনকের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে অনুদান, যাকাত তহবিলে দান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত কোনো দাতব্য হাসপাতালে দান, প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানে দান, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে প্রদত্ত দান, আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কে দান, আহসানিয়া ক্যান্সার হাসপাতালে দান, আইসিডিডিআরবিতে প্রদত্ত দান, সাভারে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র ‘সিআরপি’ এ প্রদত্ত দান, সরকার অনুমোদিত জনকল্যাণমূলক বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দান, এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশ এ দান, ঢাকা আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালে দান এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের কোনো প্রতিষ্ঠানে অনুদান।
কর রেয়াত কী?
একজন করদাতার প্রদর্শিত আয়ের কিছু অংশ ওই আয়বর্ষে (যেটি ২০ শতাংশ) বিশেষ কিছু খাতে (যেমন ভবিষ্যৎ তহবিল, ডিপিএস (বাৎসরিক ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত), সঞ্চয়পত্র, জীবনবিমা ইত্যাদি কিছু খাতে বিনিয়োগ করলে তার ১৫ শতাংশ কর রেয়াত সুবিধা পাবেন। মানে সেই পরিমাণ টাকা প্রদত্ত ট্যাক্স থেকে বাদ যাবে।
যেভাবে কর রেয়াত মিলবে
বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা দেওয়ার সময় যথাযথভাবে হিসাব-নিকাশ করে এ সুযোগ নেওয়া যাবে। বিনিয়োগ বা দানের জন্য কর রেয়াত নিতে হলে আয়কর রিটার্ন ফরমে আলাদা তফসিল আছে। এটি ২৪ডি তফসিল নামে পরিচিত। সেখানে বিনিয়োগ বা দানের বিষয়গুলো উল্লেখ করতে হবে। ওই ফরমটি পূরণ করে বার্ষিক রিটার্নে সংযুক্ত করতে হবে। এর পাশাপাশি বিনিয়োগ বা দানের প্রমাণপত্রও দিতে হবে।