ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও অ্যাপস ব্যবহার করে অর্থ লেনদেন করছে মানুষ। ফলে ঘরে বসে টাকা লেনদেনের সংখ্যা ও পরিমাণ বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও অ্যাপস ব্যবহার করে এপ্রিল-সেপ্টেম্বর সময়ে প্রতি মাসের গড় লেনদেন ছিল ৪৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে গত জুলাই মাসে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৬ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। আর নভেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা।
অর্থাৎ মাত্র চার মাসের ব্যবধানে ইন্টারনেট ব্যবহার করে লেনদেন বেড়েছে ৭৯.১৯ শতাংশ। মূলত গত অক্টোবরে হঠাৎ করে লেনদেন দ্বিগুণ হয়ে যায়, নভেম্বরেও তা অব্যাহত রয়েছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের কারণে দেশের ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের বিস্তার ঘটছে। সাম্প্রতিক সময়ে তা আরও বেড়ে গেছে। এর পেছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নির্বাচন। গত অক্টোবর থেকেই ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে লেনদেন অনেক বেড়ে গেছে। কারণ ওই মাসে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। ফলে গ্রাহকদের বড় একটা অংশ সশরীরে ব্যাংকে যাওয়ার পরিবর্তে অনলাইন মাধ্যমকে বেছে নেয়।
দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে অ্যাপসে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয় ইসলামী ব্যাংকের সেলফিন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে। লেনদেনের প্রায় অর্ধেকই করেন ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকেরা। এরপর রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের অ্যাপস নেক্সাস পে, সিটি ব্যাংকের সিটি টাচ, ব্র্যাক ব্যাংকের আস্থা ও ইস্টার্ন ব্যাংকের স্কাই ব্যাংকিং।
এছাড়া, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমটিবি স্মার্ট ও ঢাকা ব্যাংকের গো অ্যাপসসহ আরও কয়েকটি ব্যাংকের অ্যাপসের ভালো গ্রাহক রয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাইতে দেশে ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহারকারী গ্রাহকের পরিমাণ ছিল ৭৪ লাখ ৪২ হাজার ৯৬৪ জন। নভেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১ লাখ ৭২ হাজার ৬৪৮ জন। আর জুলাইতে এসব গ্রাহক ৭৮ লাখ ৭ হাজার ১৭২টি লেনদেন করেছেন। নভেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭ লাখ ৪৭ হাজার ২৪০টিতে।
অর্থাৎ পাঁচ মাসের ব্যবধানে গ্রাহক ও লেনদেন দুটোই বেড়েছে। এক সময় কেনাকাটা ও লেনদেনের পুরোটাই হতো নগদ টাকায়। পরিষেবা বিল পরিশোধের জন্যও ব্যাংকগুলোতে লাইন লেগে থাকত। মোবাইলে টাকা রিচার্জ করতেও প্রতিটি বাজার ও মহল্লায় ছিল একাধিক দোকান। কিন্তু ব্যাংকিং লেনদেনে এখন যুক্ত হয়েছে প্রযুক্তি। বাড়ছে ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও অ্যাপসনির্ভর ব্যাংকিং সেবা। বর্তমানে দেশের প্রায় ৮০ লাখ গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও অ্যাপস দিয়ে ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করছেন।
ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও অ্যাপসগুলোর মাধ্যমে হিসাবের স্থিতি জানা, যেকোনো ব্যাংকে টাকা স্থানান্তর, পরিষেবা বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, টিকিট কেনা, কার্ডের বিল পরিশোধ ও মাসিক সঞ্চয় হিসাবে টাকা জমাসহ নানা সুবিধা পাওয়া যায়।