ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: ডলারের দর ১১৭ বেঁধে দেওয়ার পরও খোলা বাজারে এ মুদ্রা তিন দামে বিক্রি হচ্ছে। একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেধে দেওয়া মূল্য, দ্বিতীয়টি মানি এক্সচেঞ্জ হাউজ রেট ও তিন নম্বরটি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর নিয়োজিত এজেন্টের দাম।
মঙ্গলবার মতিঝিলের দিলকুশা ও পুরানা পল্টনের মানি এক্সচেন্স হাউজগুলোয় এ দৃশ্য দেখা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোয় ডলার বিক্রি হচ্ছে ১২১ টাকায়। আবার যখন এ হাউজগুলো থেকে দূরে এজেন্টরা বিক্রি করছেন, মুদ্রার দাম হয়ে যাচ্ছে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৬০ পয়সা পর্যন্ত। অপরদিকে মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারণ করা দাম বোর্ডে দেখানো হচ্ছে ১১৮ টাকা ৫০ পয়সা।
মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর বাইরে দেখা গেছে, কেউ গেলে ডলার বা রিয়াল কিনবেন কি না, জানতে চাওয়া হচ্ছে। কেউ আগ্রহ প্রকাশ করলে ডলারের মূল্য ১২১ টাকা ৬০ পয়সা পর্যন্ত চাওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে পুরানা পল্টনের লিগ্যাল মানি এক্সচেঞ্জের সত্ত্বাধিকারী মো. মনির হোসেন বলেন, আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত দামে ডলার বিক্রি করছে। তবে ডলার স্টকে নেই। পেলে বিক্রি করবো। পাশের অন্যান্য হাউজে ডলার ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে।
দিলকুশার গ্লোরি মানি এক্সচেঞ্জে গেলে এক বিক্রেতা এ প্রতিবেদককে ক্রেতা ভেবে ডলার ১২১ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান। সাংবাদিক পরিচয় দিলে ডলারের দাম ১১৮ টাকা ৫০ পয়সা বলে জানান তিনি। এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত দাম। এই দামে বিক্রি করছেন বলেও তিনি দাবি করেন।
হাউজের সত্ত্বাধিকারী কে জানতে চাইলে তিনি একটি উপজেলা নির্বাচনের পোস্টার দেখানে। সেখানে ইসলাম হোসেন নামে এক ব্যক্তির ছবি দেওয়া। তিনিই এ হাউজের সত্ত্বাধিকারী বলে জানান ওই বিক্রেতা। এও বলেন, ইসলাম হোসেন শরীয়তপুরের উপজেলা চেয়ারম্যান ও পুলিশের এক সাবেক আইজির ছোট ভাই।
খোলা বাজারে মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোয় দামের পেছনে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিমাতাসুলভ আচরণ দায়ী বলে মনে করছে এ খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেছেন, ডলার বিক্রির ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোয় যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে- মানি এক্সচেঞ্জগুলো সেগুলো পায় না। ফলে খোলা বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হয়। আর বেঁধে দেওয়া দামও একটি অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত। যে কারণে খোলা বাজারে ডলার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না।
এ বিষয়ে মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এস জামান বলেন, ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয়সহ বিভিন্ন সোর্স থেকে ডলার পেয়ে থাকে। তারা প্রণোদনাসহ ১১৯ টাকা ৯০ পয়সা দামে রেমিট্যান্স কিনছে। আর মানি এক্সচেঞ্জের ডলার সংগ্রহের একমাত্র উৎস বিদেশ ফেরত প্রবাসী বা ভ্রমণকারীরা। তারা যদি ব্যাংকে বাড়তি দামে ডলার বিক্রি করতে পারে তাহলে আমাদের কাছে কেন কম দামে প্রবাসী আয় বা ডলার বিক্রি করবে। আর মানি এক্সচেঞ্জ লোকসান দিয়ে কম দামে ডলার বিক্রি করলেও কত পরিমাণই বা দিতে পারবে?
গত বুধবার (০৮ মে) ডলারের দাম ১১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৭ টাকা নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তার আগে থেকেই অবশ্য এ মুদ্রা ১২০ টাকা বা তারও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছিল। নতুন করে ১১৭ টাকা করায় খোলা বাজারে ডলার বিক্রেতাদের উপস্থিতি কমে গেছে। বাংলানিউজ।