ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে মূল্য সূচক কমার পাশাপাশি দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। এতে এক সপ্তাহেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন চার হাজার কোটি টাকার ওপরে কমে গেছে। এর মাধ্যমে টানা দুই সপ্তাহের পতনে ডিএসইর বাজার মূলধন ১০ হাজার কোটি টাকার ওপরে কমে গেছে।
বাজার মূলধন ও মূল্য সূচক কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে লেনদেনের গতি। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন কমে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ৪৩ শতাংশের ওপরে। আর প্রধান মূল্য সূচক কমেছে প্রায় এক শতাংশ।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১২১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৭টির। আর ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ ৬২ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে।
সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬২ হাজার ১৪ কোটি টাকা। যা গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল সাত লাখ ৬৬ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে চার হাজার ৪৫২ কোটি টাকা বা দশমিক ৫৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমে ছয় হাজার ৬০ কোটি টাকা বা দশমিক ৭৮ শতাংশ। এতে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমলো ১০ হাজার ৫১২ কোটি টাকা।
এদিকে, ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৬২ দশমিক ৩০ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩৭ দশমিক ১০ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৮ শতাংশ। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সূচকটি কমেছে ৯৯ দশমিক ৪০ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে এই সূচকটি কমেছে ১৭ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৮১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৮ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৮ শতাংশ।
আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ২১ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৫ দশমিক ১১ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৭ শতাংশ।
সবকটি মূল্য সূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮৪২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় এক হাজার ৪৮৮ কোটি সাত লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৬৪৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বা ৪৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে তিন হাজার ৩৭০ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় সাত হাজার ৪৪০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন কমেছে চার হাজার ৭০ কোটি ২৫ লাখ টাকা বা ৫৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। মোট লেনদেন বেশি হারে কমার কারণ গত সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেস্ট হোল্ডিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪৪ কোটি ১ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। ১১৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফু-ওয়াং সিরামিক।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- আফতাব অটোমোবাইল, লাভেলো আইসক্রিম, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, মুন্নু ফেব্রিক্স, ফরচুন সুজ, রবি এবং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন।