ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, রমজান ঘিরে পণ্যের কোনো সংকট নেই। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কেউ দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের জরুরি সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, রমজান আসছে। যেসব আইটেম লাগে, সেগুলোর কোনো শর্টেজ (সংকট) নেই। চিন্তার কোনো কারণ নেই। শর্টেজেরও কোনো কারণ নেই। কিছু মহল চেষ্টা করে, কীভাবে সিচুয়েশনকে ডিস্ট্যাবিলাইজ করা যায়। যেখানে মার্কেট ইকোনমি অপারেট করছে, সেখানে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে।
তিনি বলেন, প্রাইস লেভেল ধরে রাখার কাজগুলোই সরকার করছে। আমরা মনে করি, চিন্তার কোনো কারণ নেই। দরকার হলে আমরা অনেক কঠোর পদক্ষেপের দিকে চলে যাব। দরকার হলে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের দিকে যাব, কাউকে ছাড় দেব না।
এখনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, না। এখনো হয়নি।
তাহলে জরুরি বৈঠকের কারণ কি? সাংবাদিকরা পাল্টা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, নির্বাচনের পরে ন্যাচারালি সবাই তো বলছে, কী করছেন, কী করলেন।
আপনাদের টার্গেট কি শুধু রমজান, এমন প্রশ্নের উত্তরে আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, শুধু রমজান নয়। রমজান নিয়ে চিন্তা তো আছে মানুষের মধ্যে, সে জন্য।
চালের দাম বাড়ানোর পর সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন, আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। আলোচনা করছি, দেখছি। দেখুন আপনারা, ইতোমধ্যে দাম কমেছে।
ব্যবসায়ীরা এখন ট্রাক নিয়ে ক্ষেত থেকে আলু তুলছে। তাদের লাভ হচ্ছে। বাজারে মনোপলি হচ্ছে, সেখানে কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা অ্যাকশনে তো যাচ্ছি।
জিনিসপত্রের দাম কত দিনের মধ্যে কমবে, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা কখনোই বলা সম্ভব না।
আমদানিকে প্রাধান্য দেবেন কি না, এ প্রশ্নে আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, দরকার হলে আমদানি করতে হবে, এখনো তো সেরকম কিছু হয়নি।
রিজার্ভ বাড়াতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, করছি তো আমরা। আপনারা দেখছেন আমাদের যারা ডেভেলপমেন্ট পার্টনার, তাদের সঙ্গে মাল্টিকারেন্সি অ্যাপ্রোচ গ্রহণ করছি। শুধু ডলার দিয়ে তো আমরা করছি না।
বেসরকারি খাত সংকটের মধ্যে আছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা কি চলতে পারছে? আপনি কী মনে করেন? এ প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রাইভেট সেক্টর তো প্রাইভেট সেক্টর। প্রণোদনা ছাড়া আর মাল্টিপল অ্যাপ্রোচেস ছাড়া তো অন্য কিছু করা যায় না। তবে ব্রড সেক্টরগুলো তো নিয়ন্ত্রণে আছে।
ডলার সংকট নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, গত বছরের জুলাই থেকে জানুযারি পর্যন্ত আটটি পণ্যের যত এলসি হয়েছিল, এবার তার চেয়ে ১০-১৫ শতাংশ বেশি এলসি হয়েছে। এলসি খোলার সমস্যা ঠিক নয়। পণ্যগুলো সময়মতো দেশে এসে পৌঁছাবে বলে আশা করছি। মধ্যস্বত্বভোগীরা সমস্যা না করলে দাম বাড়ার কোনো কারণে নেই। পণ্যের কোনো ঘাটতি হবে না।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে সভায় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।