ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ বলেছেন, বিগত ১৫ বছরে দেশে ডালের উৎপাদন বেড়েছে চার গুণের বেশি। ২০০৮-০৯ সালে যেখানে মাত্র দুই লাখ টনের মতো ডাল উৎপাদন হতো, সেখানে ২০২২-২৩ সালে উৎপাদিত হয়েছে প্রায় নয় লাখ টনের মতো। কিন্তু তা দেশের চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ। সে জন্য আমাদের এখন লক্ষ্য ডালে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে ‘আন্তর্জাতিক ডাল দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) আয়োজিত আন্তর্জাতিক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ডালের উৎপাদন বাড়ার জন্য উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন, মানসম্পন্ন বীজের পর্যাপ্ত সরবরাহ এবং আধুনিক উৎপাদন প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। উন্নত প্রযুক্তি যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে গবেষণা এবং কৃষকের মাঠের মধ্যে ফলনের ব্যবধান কমিয়ে ফলন বাড়ানো যেতে পারে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে জলবায়ু সহনশীল জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে লবণাক্ত, খরা ও চরাঞ্চলে ডালের চাষ বাড়াতে হবে। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার।
কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক দেবাশীষ সরকার, খাদ্য ও কৃষি সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি জিয়াওকুন শি, গেইনের কান্ট্রি ডিরেক্টর রুদাবা খন্দকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১৫০ জন অংশগ্রহণকারী অংশ নেন।
বারির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ কে এম মাহবুবুল আলম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, দেশে ডালের চাহিদা প্রায় ২৫ লাখ মেট্রিক টন। এ চাহিদার এক তৃতীয়াংশ স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। বাকি চাহিদা মেটাতে ডাল আমদানি করতে হয়। গতবছর প্রায় নয় হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে ডাল আমদানিতে।
ডাল উৎপাদনে পিছিয়ে থাকার বিষয়ে উপস্থাপনায় জানানো হয়, দেশে চাষযোগ্য জমির ৭৬ শতাংশ জমিতে ধান চাষ হয়, অথচ ডালের চাষ হয় মাত্র ২ দশমিক ৪০ শতাংশ জমিতে। অন্য ফসলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারা, উন্নতজাত ও বীজের অপর্যাপ্ততা, জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষিযন্ত্রের অপ্রতুলতা প্রভৃতি কারণে ডালের উৎপাদন কম বলে জানান তিনি।
ডালের গুরুত্বকে তুলে ধরার জন্য জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা প্রতি বছর ১০ ফেব্রুয়ারিকে বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক ডাল দিবস হিসেবে উদযাপন করে আসছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘মাটি ও মানুষের পুষ্টির জন্য ডাল’। টেকসই খাদ্য উৎপাদন এবং সুস্থ জাতি গঠনে দেশে ও বিশ্বব্যাপী ডালের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো এবং বার্তা ছড়িয়ে দেওয়াই এর লক্ষ্য।