ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসের মতো দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও দেশের শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে বিমা খাত। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৮৬ শতাংশ বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে। দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বিমা কোম্পানিগুলো দাপট দেখালেও তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারেনি অন্য খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো। দাম বাড়ার দিকে বাকি খাতগুলোর বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমেছে। ফলে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। এরপরও বাজারটিতে মূল্যসূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। সিএসইতে মূল্যসূচক ঊর্ধ্বমুখী রাখতে বড় ভূমিকা রেখেছে বিমা খাত। বাজারটিওত প্রায় সবকটি বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে।
এর আগে টানা তিন কার্যদিবস দরপতন হওয়ার পর রোববার শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বড় দাপট দেখায় বিমা খাত। বিমা খাতের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতেও। ফলে ডিএসইতে সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি বাড়ে লেনদেনের পরিমাণ।
এ পরিস্থিতিতে সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতেও। ফলে লেনদেনের শুরুর দিকে দাম বাড়ার তালিকায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান থাকার পাশাপাশি মূল্যসূচকও ঊর্ধ্বমুখী থাকে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত বিমা কোম্পানিগুলো দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট ধরে রাখতে পারলেও অন্য খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো পারেনি। ফলে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়েছে, অন্যদিকে ডিএসইতে সবকটি মূল্য সূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৩৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২২১টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিমা কোম্পানি রয়েছে ৫০টি। বিপরীতে বিমা খাতের ৮টির শেয়ার দাম কমেছে।
দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বিমা কোম্পানির এমন দাপটের দিনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৬৬৬ পয়েন্টে নেমে গেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৪১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। অবশ্য লেনদেন সাড়ে ৯০০ কোটি টাকার ওপরে রয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৯৬৮ কোটি ২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯৮৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ১৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে ই-জেনারেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিসের ৩৫ কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাভেলো আইসক্রিম।
এছাড়া, ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-বেস্ট হোল্ডিং, গোল্ডেন সন, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, ওরিয়ন ইনফিউশন, ফু-ওয়াং সিরামিক, স্যালভো কেমিক্যাল এবং নাভানা ফার্মাসিউটিক্যাল।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ২৫২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৭টির এবং ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১০৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।