সম্পাদকীয়: নিউজিল্যান্ডের চীনগামী বিমানগুলোতে পর্যটকের পাশাপাশি যেত বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্য। চীনই তাদের খাদ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। চীন করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে সবধরনের পর্যটক প্রবেশ বন্ধ করে দিলে বিপাকে পড়ে নিউজিল্যান্ড। খাদ্যপণ্য রপ্তানিতে দেখা দেয় বড় সংকট।
চীনের বিমান সংস্থাগুলোর ফ্লাইট বাতিলে রপ্তানি বিপদ কাটাতে সে সময় এয়ার নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি করে কিউই সরকার- যারা বিমানের যাত্রীআসন খালি থাকলেও ফলমূলসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য নিয়ে চীন, সিঙ্গাপুর ও আমেরিকার রুটে যাতায়াত করবে, তাদের ঋণ দেয়া হবে। একই প্রস্তাব দেয়া হয় মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক এয়ারলাইনগুলোকেও।
বর্তমান আধুনিক বিশ্বের ৮০০ কোটি মানুষের চার-পঞ্চমাংশের মুখে খাবারের সংস্থান হয় আমদানির মাধ্যমে। গত বছর খাদ্য আমদানিতে যে দেড় লাখ কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে, ২০০০ সালের তুলনায় তা প্রায় তিনগুণ বেশি। প্রতিনিয়ত অসংখ্য বিমান, জাহাজ, লরিতে করে খাদ্যপণ্য আনা-নেয়া হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
করোনা মহামারির মধ্যে বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থা এখনও বেশ স্বাভাবিক। আর এটি সম্ভব হয়েছে দ্রুত উৎস বদল ও সরবরাহ ব্যবস্থা পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে। এ বছর বেশিরভাগ কাঁচামালেরই দাম কমতে দেখা গেছে।
করোনা মহামারির কারণে অন্তত ১০০ কোটি মানুষের আয় কমেছে না হয় বন্ধ হয়ে গেছে। জাতিসংঘ আশঙ্কা করছে, চলতি বছর বিশ্বে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ২৬ কোটি থেকে দ্বিগুণ বেড়ে যেতে পারে।
বিশ্বের কোন দেশই এই ঝুঁকিমুক্ত নয়। এমনকি আমেরিকাও না, এখনই সেখানে খাবারের জন্য মানুষের এক কিলোমিটারের বেশি লম্বা লাইন দেখা গেছে। আর সংকট মোকাবিলা সম্ভব আর এতে ঠিক রাখতে হবে আন্তর্জাতিক খাদ্য ব্যবস্থা, সহজ করতে হবে প্রক্রিয়াজাতকরণে দীর্ঘ পথ, এছাড়া অভ্যাসে পরিবর্তন আনা এবং খাদ্যদ্রব্যে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ভেবেচিন্তে।