প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত এক লাখ ৬৭ হাজার ২২৫ জন নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীর জন্য ঈদুল ফিতরের উপহার হিসেবে গত ১১ মে ৭৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেন এবং প্রতি শিক্ষক পাঁচ হাজার টাকা এবং কর্মচারী আড়াই হাজার টাকা করে পাওয়ার কথা ছিল।
জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকা, পরিচয়পত্রে ভুল, ভুল ফোন নম্বর ইত্যাদি কারণে দুই মাসেও অনুদানের এ টাকা পাননি তাদের মধ্যে এক লাখ ৩৬ হাজার ৮৭৭ জন। অর্থাৎ এখনো ৮২ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারী অনুদানের এ টাকা পাননি।
৩০ জুন পর্যন্ত ১৭ হাজার ২৩৫ জন শিক্ষক-কর্মচারী অনুদানের টাকা পেয়েছেন। তবে এ সংখ্যা আরও কম হতে পারে। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত এক লাখ ৬৭ হাজার ২২৫ জনের মধ্যে মাত্র ৩০ হাজার ৩৪৮ জন অনুদানের টাকা পেয়েছেন, দাবি মাদরাসা অধিদফতরের।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়ের। কারণ সুবিধাভোগীদের টাকা সরাসরি মোবাইলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত তারাই নিয়েছেন। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, থাকলেও নানা ভুল, আবার অনেকে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খুলতে আগ্রহী নন। ফলে বিকাশ ও নগদ অ্যাকাউন্ট না থাকা এ শিক্ষক-কর্মচারীরা পরিচিত অন্য কারও অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়েছেন। এসব নম্বরে টাকা পাঠাতে গিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় দেখে যে, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ব্যবহৃত নামের সঙ্গে ওই শিক্ষক-কর্মচারীদের নামের মিল নেই।
বাংলাদেশ নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার, সরকারের বিশেষ অনুদান পেতে একটি জটিলতা তৈরি হয়েছে। কারণ অনেক শিক্ষক-কর্মচারী নিজেদের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট না থাকায় তারা অন্যের অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়েছেন। আর এতে নাম নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় অর্থ মন্ত্রণালয় অর্থ ছাড় করছে না। এ টাকা আদৌ আমরা পাবো কি না জানি না। আশা করি, সরকারের শীর্ষ মহল ব্যবস্থা নেবে।
মফস্বল অঞ্চলের একজন নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী সরকারি বেতন-ভাতা পান না। ব্যাংক বা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট করার কোনো প্রয়োজন হয়নি তাদের। তারপরও গত বছর সরকারের অনুদান নেওয়ার জন্য দেড় হাজার টাকার বেশি খরচ করে তারা অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। তাই আমাদের দাবি, গত বছর শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের চেকের মাধ্যমে অনুদানের অর্থ দিয়েছিল, এবারও যেন তা-ই করা হয়, জানান তিনি।