আয়েশা সিদ্দিকা, জাবি প্রতিনিধি: আগামীকাল (৯ মার্চ) শুরু হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের (৫০ তম ব্যাচ) ক্লাস। সিট সংকট এবং করোনা মহামারির কারনে অনলাইনে শুরু হচ্ছে তাদের ক্লাস।
আগামীকাল ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও অনেক বিভাগ থেকেই শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ না করা এবং বিস্তারিত তথ্য না জানানোর অভিযোগ উঠেছে। বেশ কয়েকটি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে প্রশাসন তাদের কোন দিকনির্দেশনা দেয় নি। তবে কয়েকটি বিভাগ নিজেদের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অধিকাংশ বিভাগই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা পায় নি নতুন বর্ষের শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগের ব্যাপারে। তবে নৃবিজ্ঞান, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞানসহ কয়েকটি বিভাগ শিক্ষার্থীদের সাথে ই-মেইল এবং মেসেজের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছে ক্লাসের ব্যাপারে।
কলা অনুষদ এবং জীববিজ্ঞান অনুষদের বিভাগগুলোর প্রায় সবগুলো বিভাগের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। কলা অনুষদের একটি বিভাগ আজ (মঙ্গলবার) রাতের মধ্যে যোগাযোগ সম্পন্ন করবে বলে জানিয়েছে।
ব্যবসায় অনুষদের শুধু ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগ এখনও শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করেনি। বিভাগটি রবিবার থেকে ক্লাস কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানিয়েছে কতৃপক্ষ। অন্যান্য বিভাগের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে।
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ ছাড়া বিজ্ঞান অনুষদের অন্যান্য বিভাগ শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করেছে ই-মেইলের মাধ্যমে। তবে যাদের ই-মেইল পাওয়া যায় নি তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছে বলে জানা গিয়েছে। পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ থেকে দিক নির্দেশনা না পাওয়ার অভিযোগ করেছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরূল আলম বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভাগগুলোকে জানানো হয়েছে শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য। জুম লিংক সরবরাহ করতেও বলা হয়েছে। কোন বিভাগ যোগাযোগ না করলে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ বিষয়টি দেখবে’।
প্রথম বর্ষের ক্লাস স্ব-শরীরে শুরু করতে না পারাকে প্রশাসনের ব্যর্থতা দাবী করে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাকিবুল রনি বলেন, ‘ব্যর্থতার দায় ঢাকতে প্রশাসন করোনার প্রকোপ ও আবাসিক হলে আসন সংকটের কথা বললেও দেশে করোনা সংক্রমণের হার একেবারেই তলানীর দিকে এবং ক্রমাগত নিম্নগামী। তাছাড়া হলগুলো থেকে অছাত্রদের বিতাড়নের যে হম্বিতম্বি প্রশাসন দেখয়েছিলো, সে অনুযায়ী কাজ তারা ইচ্ছাকৃতভাবেই করেনি’।
৫০ তম ব্যাচের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের এক শিক্ষার্থী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবন অনলাইনে শুরু করা আসলে হতাশা জনক। আমরা চাই দ্রুত স্ব-শরীরে ক্লাস শুরু করা হোক’।
ছাত্র ফ্রন্ট এর সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, ‘নতুন শিক্ষার্থীদের হাতে ডিজিটাল ডিভাইস এর ব্যবস্থা না করেই,সম্পুর্ন অযৌক্তিকভাবে অনলাইনমুখী পাঠদানের যে সিদ্ধান্ত, এটা তো স্পষ্ট হঠকারীতা। জেনেশুনেই বিশাল অংকের একদল শিক্ষার্থীকে ক্লাসবঞ্চিত করার যে প্রয়াস,আমরা সেটার নিন্দা জানাই’।