ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) এবং উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার সময় ও নম্বর কমানোর প্রস্তাব এসেছে। গত বছর টেস্ট পরীক্ষা না হলেও এবার এসএসসি-এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার আগে এ পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সম্প্রতি এসএসসি, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠান-সংক্রান্ত ভার্চুয়াল সভায় এসব প্রস্তাব আসে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা এতে অংশ নেন।
সভায় উপস্থিত অধিকাংশই ২০২২ সালের এসএসসি, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা তিন ঘণ্টার পরিবর্তে দেড় ঘণ্টা এবং পরীক্ষার মান ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৫০ নম্বর করার পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে এর ভিন্ন মতও এসেছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত পুনর্বিন্যস্ত পাঠ্যসূচি (এসএসসি পর্যায়ে ১৫০ দিনের এবং এইচএসসি পর্যায়ে ১৮০ দিনের) অনুযায়ী এসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, করোনা মহামারির কারণে এখন স্কুল-কলেজ বন্ধ রয়েছে। তাই এসএসসি-এইচএসসিতে নম্বর ও সময় কমিয়ে আনার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আলোচনায় উপস্থিত বেশিরভাগই নম্বর ও সময় কমিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছেন। আবার অনেকেই বলছেন, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করতে। আমরা খুব শিগগিরই শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।
সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, এসএসসি-এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য তারিখও নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার টেস্ট পরীক্ষা ৩ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে হবে। আর এসএসসির চূড়ান্ত পরীক্ষা ১৯ মে শুরু হয়ে শেষ হবে ৯ জুন। এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার টেস্ট পরীক্ষা শেষ করতে হবে ৭ জুনের মধ্যে। চূড়ান্ত পরীক্ষা ১৮ জুলাই শুরু হয়ে শেষ হবে ৩১ আগস্ট।
সভা সূত্র জানায়, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ক্ষেত্রে ইসলাম শিক্ষা এবং আইসিটি বিষয় বাদ দেওয়ার প্রস্তাবনা এসেছে। এছাড়া, প্রতিটি বিষয়ের পরীক্ষার পূর্ণমান হবে ৫০ নম্বর। প্রতিটি বিষয়ের পরীক্ষা আলাদাভাবে গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সময় থাকবে ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের নম্বর বণ্টনের ক্ষেত্রে বাংলা প্রথম পত্রে এমসিকিউ অংশে ২০ নম্বর ও লিখিত অংশের ৩০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে। বাংলা দ্বিতীয় পত্রে রচনামূলক অংশে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে দুই পাবলিক পরীক্ষায় বাংলা প্রথম পত্রে লিখিত অংশের ছয়টি প্রশ্নের মধ্যে যেকোনো তিনটি উত্তর দিতে হবে। যেসব বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা নেই সেগুলোর লিখিত অংশে ১১টি প্রশ্নের মধ্যে যেকোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা রয়েছে এমন বিষয়ে লিখিত অংশে আটটি প্রশ্নের মধ্যে যেকোনো তিনটির উত্তর দিতে হবে।
এসএসসি-এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রমের ওপরও গুরুত্ব আরোপ করা হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভায়।
মাউশি সূত্র জানায়, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্ধারিত ২৫ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টের মধ্যে ১৭ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম বাকি রয়েছে। বাকি অ্যাসাইনমেন্ট দ্রুত শুরু করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রমে জোর দিতে বলা হয়েছে। সপ্তাহে ছয় দিনে প্রতিদিন চারটি বিষয়ে ক্লাস নিতে হবে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে অনলাইনে ও টিভিতে ক্লাস চলমান থাকবে।