নজরুল ইসলাম, ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের (মমেক) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ মিথ্যা অভিযোগ দেওয়ার দায়ে ১০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তাদের মধ্যে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসানকে তিন বছর, দুইজনকে দুই বছর ও সাতজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়াও এ ঘটনায় অনিচ্ছাকৃত সম্পৃক্ত থাকায় প্রথম বর্ষের আট শিক্ষার্থীকে সতর্ক করা হয়েছে।
শনিবার (৫ মার্চ) সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. চিত্তরঞ্জন দেবনাথ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুই বছরের জন্য বহিষ্কৃতরা হলেন- ম-৫৫ ব্যাচের ছাত্র ফায়াদুর রহমান আকাশ ও বিডিএস-৬ ব্যাচের তামান্না তাসকিন।
এক বছরের জন্য বহিষ্কৃতরা হলেন- ম-৫৪ ব্যাচের সুনীতি কুমার দাস, একই ব্যাচের সানবীম খান, মাহিদুল হক, তানবিন হাসান, ম-৫৫ ব্যাচের কাশফী তাবরীজ, একই ব্যাচের রাপ্পু কর্মকার এবং সাখাওয়াত হোসেন সিফাত।
কলেজ অধ্যক্ষের সভাপতিত্বে কলেজের সভাকক্ষে বেলা ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলা একাডেমিক কাউন্সিলের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. চিত্তরঞ্জন দেবনাথ বলেন, সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ উঠেছিল তা তদন্তে সব কিছুই মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। একই সঙ্গে সম্মানিত একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এবং আবেদনপত্রে আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করায় এম-৫৩ ব্যাচের ছাত্র ও কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসানকে শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে আগামী ৩ বছরের জন্য সমস্ত একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পাশাপাশি তিনি কলেজ ছাত্রাবাসে অবস্থান করতেও পারবেন না।
অধ্যক্ষ বলেন, মিথ্যা অভিযোগ এনে মানববন্ধনের মাধ্যমে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে একজন শিক্ষককে তথা সমস্ত শিক্ষকমণ্ডলীকে হেয় প্রতিপন্ন এবং প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন করায় দুইজনকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার এবং ওই মানববন্ধনে স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণের জন্য আরও সাতজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়াও ইচ্ছার বিরুদ্ধে অংশ নেওয়া আরও আট শিক্ষার্থীকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে তারা এ ধরনের কার্যক্রম অথবা কলেজের শৃঙ্খলাবিরোধী কোনো কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে না বলে মুচলেকা দিয়েছে।
একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসে মিছিল মিটিং সভা-সমাবেশসহ সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে বলেও জানিয়েছেন অধ্যক্ষ।
এদিকে একাডেমিক কাউন্সিলের সভাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।