ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চূড়ান্ত ভর্তির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী সোমবার (২৩ জানুয়ারি) থেকে সরাসরি ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। চলবে আগামী বুধবার (২৫ জানুয়ারি) পর্যন্ত। তবে এবারের ভর্তিতে বিগত বছরের থেকে ৭ হাজার টাকা অধিক গুনতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এ নিয়ে হতাশা লক্ষ্য করা গেছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মাঝে।
জানা যায়, আগামী সোমবার থেকে ২০২১-২২ সেশনে প্রথম সেমিস্টারের চূড়ান্ত ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। এবার ভর্তি ফি সর্বমোট ১৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে গুচ্ছের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। সরাসরি ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের আরও ১০ হাজার টাকা নিয়ে আসতে হবে। একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে জানান ২০২১-২২ সেশনে শাবি ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ তালুকদার।
এরকম ভর্তি ফি নির্ধারণে এবং এত অল্প সময়ে এত টাকা ব্যবস্থা করা শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে তাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা বলে মন্তব্য করছেন শিক্ষর্থীরা। দেখা দিয়েছে টাকার অভাবে ভর্তি না হতে পারার শঙ্কাও। সামাজিক মাধ্যমেও তারা এ নিয়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
জানা যায়, গত বছর ২০২০-২১ সেশনে গুচ্ছ পুরো ভর্তি প্রক্রিয়ায় ভর্তি ফি ছিল ৮১০০ টাকা। আর এবার তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। এক বছরের ব্যবধানে শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে ৭ হাজার টাকা। এ নিয়ে অনেক শিক্ষার্থীর মাঝে ভর্তি না হতে পারার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে বলে জানান একাধিক শিক্ষার্থী।
ভর্তিচ্ছু একাধিক শিক্ষার্থী জানান, আমরা গুচ্ছ ভর্তিতে ৫ হাজার টাকা ফি পরিশোধ করার পর ভেবেছিলাম আর ৪-৫ হাজার টাকা হলেই আমাদের ভর্তি সম্পন্ন হয়ে যাবে। আমরা বাসায়ও সেভাবে বলে রেখেছি। কিন্তু এবার হঠাৎ সেটা ১০ হাজার টাকা দেখে আমরা হতবাক হয়ে গেছি। এত টাকার কথা বাসায় কীভাবে বলবো এবং আমাদের পরিবার সেই টাকাটা কীভাবে ম্যানেজ করবে সেটার পথ আমরা খুঁজে পাচ্ছি না।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বললে তারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা জানান, হঠাৎ করে এত টাকা ভর্তি ফি বৃদ্ধি পুরোপুরি অযৌক্তিক। আমরা এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি।
এদিকে এ নিয়ে ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। শিক্ষা কোনো পণ্য নয়, শিক্ষা মানুষের অধিকার মন্তব্য করে অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির নামে দফায় দফায় ফি বৃদ্ধি করার মাধ্যমে শিক্ষার দ্বারকে সংকুচিত করা হচ্ছে, তারা মানুষের মৌলিক অধিকারকে খর্ব করছে বলে মন্তব্য করেছেন। অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির নামে অবিলম্বে বর্ধিত ফি বৃদ্ধি প্রত্যাহার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন বর্ষের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর করার জোর দাবি জানান তারা।
তবে কেন হঠাৎ একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে এত টাকা ভর্তি ফি বাড়ানো হয়েছে সেটা নিয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি কেউই। একাধিক একাডেমিক কাউন্সিল সদস্যদের সঙ্গে কথা বললেও অনেকেই এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। আবার অনেকেই এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে মন্তব্য করেছেন। তবে কি তাদের উপস্থিতি ছাড়াই একাডেমিক কাউন্সিলে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নও তুলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সিনিয়র শিক্ষকও।