ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ২০২২ সালের এইচএসসি-সমমান পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেওয়া হয়েছে। সেই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। এ বিষয়ে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা তাদের এইচএসসি পরীক্ষার সিলেবাসের আলোকে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করতে অনুরোধ জানিয়েছি। আশা করি সবাই সেটি বাস্তবায়ন করবেন।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটিতে ২০২২ সালের এইচএসসি-সমমান পরীক্ষা ফলাফল প্রকাশ সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ডা. দীপু মনি বলেন, গুচ্ছ পরীক্ষা হচ্ছে, সেটি হবে। যে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপরে এইচএসসি পরীক্ষা হয়েছে ঠিক সেই সিলেবাসের ওপরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাটি হওয়া উটিৎ। সম্প্রতি আমাদের মতামত নিয়ে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছি। আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষা নিতো, এখন অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে এসেছে। এসএসসিতে যে বিষয়গুলো নিয়ে পরীক্ষা হয় তার আরেকটু উচ্চতর স্তরে এইচএসসি। সেই এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়গুলো নিয়ে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হয়।
তিনি বলেন, বিশ্বের উন্নত্ব দেশে একটা পরীক্ষা হয়, সেখানে গণিত, বিজ্ঞান, ভাষা ও সাধারণ বিষয়ের ওপর পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেই একটি পরীক্ষা দিয়ে জাতীয় একটি তালিকা তৈরি করা হয়। এ ফলাফলের স্কোরের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে থাকে। আমাদের শিক্ষার্থীরা এইচএসসিতে যে পরীক্ষা দিচ্ছে আবার তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে একই পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। সেটি না করে ভাষা, গণিত ও সাধারণ জ্ঞানের ওপর একটি পরীক্ষা নেওয়া হলে ভর্তি পরীক্ষায় হয়রানি ও সহজীকরণ হতো। বিদেশি কারিকুলামে যারা পড়ছে তাদেরও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকা উচিৎ। একটি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হলে সবার জন্য সুবিধা হতো।
তিনি আরও বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে কাউকে কাউকে চার-পাঁচবার বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীর পচ্ছন্দের বিষয়ে পড়তে মাইগ্রেশন সুবিধা নিতে তাকে একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা একটি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি নিশ্চিত করতে না পারছি ততক্ষণ পর্যন্ত গুচ্ছ পদ্ধতিকেও আরও ভালো করে ব্যবস্থাপনা করা যায় সেটা করা হচ্ছে।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে ১০ বছর গেছে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক স্টেক হোল্ডার থাকে। সেখানে শিক্ষক, শিক্ষক সমিতি আবার কিছু পুরোপরি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। কাজেই তাদের সঙ্গে আলোচনা ও মতামত নিয়ে বাস্তবায়ন করতে হয়েছে। সে কারণে গুচ্ছ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে অনেক সময় লেগে গেছে। প্রথমে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এ পদ্ধতিতে গেছে। ধাপে ধাপে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছতে গেছে। বর্তমানে চার-পাঁচটি বাদে সব বিশ্ববিদ্যালয় এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। একটি পরীক্ষা পদ্ধতিতে যেতে এতো সময় নেওয়া হবে না। অনেক কম সময়ে আমরা আশা করি ভর্তি পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হবে।
করোনা মহামারির কারণে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বাদে ২০২২ সালের পুনর্বিন্যাস করা সিলেবাসে দুটি আবশ্যিক, তিনটি নৈর্বাচনিক ও একটি চতুর্থ বিষয়সহ ছয়টি বিষয়ে মোট ১২টি পত্রের পরীক্ষা নেওয়া হয়। আইসিটি বিষয়ের নম্বর এসএসসি-সমমান এবং জেএসসি-জেডিসির ফলাফলের সাবজেক্ট ম্যাপিং করে নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।