ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ছয় কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৪৭টি। এর মধ্যে ১২৮টি মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল আর ১৯টি উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের কলেজ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মনিটরিং অ্যান্ড ইভল্যুশন উইংয়ের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তার তথ্য জানতে গত ২৬ অক্টোবর মাউশির অধীনে ক্ষতিগ্রস্ত চার অঞ্চলে (চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, খুলনা ও বরিশাল) চিঠি পাঠানো হয়। এর মধ্যে ৬৬ উপজেলার প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয় গত ০৩ নভেম্বর।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন মনিটরিং অ্যান্ড ইভল্যুশন উইংয়ের পরিচালক অধ্যাপক মো. আমির হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে ও আর্থিক পরিমাণের তথ্য মাঠ পর্যায় থেকে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী ৬৬ উপজেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক পাঁচ কোটি ৮১ লাখ ৪২ হাজার টাকা। বিষয়টি আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। আশা করি খুব দ্রুতই ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সংস্কার কাজ শুরু হবে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঁচ কোটি ৮১ লাখ ৪২ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৪৭টি। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বর্তমানে ২৭টিতে পাঠদান পুরোপুরি ব্যাহত হচ্ছে আর আংশিক হচ্ছে ১২০টি প্রতিষ্ঠানে। আর এ সময় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে ৫৭১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
জরিপের তথ্য বলছে, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভোলা জেলার ৬১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ক্ষতির পরিমাণ এক কোটি ৮৬ লাখ ২০ হাজার টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সাতটিতে পুরোপুরি ও ৫৪টি আংশিক পাঠদান ক্ষতি হচ্ছে। এর পরের অবস্থান কুমিল্লা জেলার। এ জেলায় ২০টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি আংশিক ও ৩টিতে পাঠদান পুরোপুরি ক্ষতি হচ্ছে।
এছাড়া, ক্ষতিগ্রস্ত চট্টগ্রাম জেলার তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনটিতে আংশিক, পটুয়াখালীর আটটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চারটিতে আংশিক আর চারটিতে পুরোপুরি, বাগেরহাটের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পাঁচটিতেই আংশিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
আর ঝালকাঠি জেলার ১২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২টিতেই আংশিক, চাঁদপুরের সাতটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চারটিতে আংশিক ও তিনটিতে পুরোপুরি, যশোরের তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনটিতেই আংশিক, পিরোজপুরের দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দুটিতেই আংশিক, লক্ষ্মীপুরের দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটিতে আংশিক একটিতে পুরোপুরি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটিতেই আংশিক, খুলনার ১২টির মধ্যে আটটিতে আংশিক চারটিতে পুরোপুরি, নোয়াখালীর দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটিতে আংশিক একটিতে পুরোপুরি, বরগুনার সাতটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনটিতে আংশিক চারটিতে পুরোপুরি, বরিশালের দুটি প্রতিষ্ঠানের দুটিতেই আংশিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।