ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বুধবার রাতে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এ নীতিমালা জারি করা হয়।
এতে সই করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান।
ভর্তির যোগ্যতা
২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে দেশের যেকোনো শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিদেশি কোনো বোর্ড বা অনুরূপ কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে তার সনদের মান নির্ধারণের পর ভর্তির যোগ্য বিবেচিত হবে।
বিভাগ নির্বাচন
বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের যেকোনো একটিতে আবেদন করতে পারবেন। মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা শুধু মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ভর্তির সুযোগ পাবেন। একইভাবে ব্যবসায় শিক্ষার শিক্ষার্থীরা শুধু ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগে আবেদনের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবে।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের যেকোনে গ্রুপে ভর্তির আবেদন করতে পারবে।
ভর্তি ফি ও সেশন চার্জ
নীতিমালা অনুযায়ী- এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে পাঁচ হাজার টাকা, মেট্রোপলিটন (ঢাকা ছাড়া) বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে তিন হাজার টাকা, জেলায় দুই হাজার টাকা এবং উপজেলা ও মফস্বলে দেড় হাজার টাকা।
নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা ভার্সনে সাড়ে সাত হাজার টাকা, ইংরেজি ভার্সনে সাড়ে আট হাজার টাকা, মেট্রোপলিটন (ঢাকা ছাড়া) বাংলা ভার্সনে পাঁচ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ছয় হাজার টাকা, জেলায় বাংলা ভার্সনে তিন হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে আড়াই হাজার টাকা এবং উপজেলা ও মফস্বলে বাংলা ভার্সনে আড়াই হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে তিন হাজার টাকা।
শিক্ষা বোর্ড শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়ন করার সময় রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ১৪২ টাকা, ক্রীড়া ফি বাবদ ৫০ টাকা, রোভার/রেঞ্জার ফি বাবদ ১৫ টাকা, রেড ক্রিসেন্ট ফি ১৬ টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফি ৭ টাকা, বিএনসিসি ফি ৫ টাকা, শিক্ষক কল্যাণ ফি ও অবসর সুবিধা ভাতা ফি ১০০ টাকাসহ মোট ৩৩৫ টাকা নিতে পারবে।
শিক্ষার্থী নির্বাচন পদ্ধতি
ভর্তির জন্য কোনো বাছাই বা ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে না। কেবল শিক্ষার্থীর এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে। কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানের ৯৩ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে, যা মেধার ভিত্তিতে নির্বাচন করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ২ শতাংশ কোটা নূন্যতম যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে সংরক্ষিত থাকবে। অন্যদিকে মোট আসনের ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনিদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
অনলাইনে আবেদন ও ভর্তি
শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদিত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। www.xiclassadmission.gov.bd-এ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনলাইনে ভর্তির আবেদন করা হবে।
অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে ১৫০ টাকা আবেদন ফি জমা সাপেক্ষে সর্বনিম্ন পাঁচটি এবং সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানের জন্য পছন্দক্রমের ভিত্তিতে আবেদন করতে পারবে। একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবে, তার মধ্য থেকে শিক্ষার্থীর মেধা, কোটা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি কলেজে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।
আবেদন শুরু ও ভর্তির তারিখ
প্রতি বছর ভর্তির আবেদন শুরু, শেষ, ভর্তির সময়সীমা এবং ক্লাস শুরুর তারিখ নীতিমালার সঙ্গে প্রকাশ করা হয়। এবার তা করা হয়নি। তবে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী ২৬ মে থেকে ভর্তির আবেদন শুরু হতে পারে। এ প্রক্রিয়া চলবে ১১ জুন পর্যন্ত।
আবেদন ও নিশ্চায়ন প্রক্রিয়া শেষে ভর্তির সুযোগ পাবেন শিক্ষার্থীরা। এরপর ০১ জুলাই থেকে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলোর।