।। নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
মোবাইলে টাকা লেনদেন এখন দেশজুড়েই জনপ্রিয়। কিন্তু এতে ভোক্তার ব্যয় অত্যধিক। ১ হাজার টাকা পাঠাতে লেগে যায় ১৮ টাকা পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা পাঠাতে খরচ করতে হয় ১৮০ টাকা। কিন্তু বাংলাদেশ ডাকবিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করলে মাত্র ১০ টাকা খরচ করে ১০ হাজার টাকা পাঠানো যাবে।
ডাকঘরের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা বা এর বেশি পরিমাণ অর্থ একবারে পাঠানো যাবে। কিন্তু অন্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এত টাকা একদিনে পাঠানো যায় না। ডাকবিভাগের মাধ্যমে পাঠানো টাকা তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহক যে কোনো ডাকঘরের শাখা থেকে নগদ আকারে তুলতে পারবেন। সারা দেশে ডাকঘরের প্রায় ১০ হাজার শাখা রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে শাখা রয়েছে। সব শাখাকে ইতিমধ্যে অনলাইনের আওতায় আনা হয়েছে।
তাছাড়া অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা স্থানান্তর করতে নিজের অ্যাকাউন্ট থাকতে হয়। কিন্তু ডাকঘরের মাধ্যমে টাকা স্থানান্তর করতে গ্রাহকের কোনো অ্যাকাউন্টের প্রয়োজন নেই। শুধু প্রেরক ও প্রাপকের মোবাইল নম্বর ও পরিচিতি সংরক্ষণ করা হয়। এর বাইরে বাড়তি কোনো তথ্যের প্রয়োজন পড়ে না।
এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছিলেন, মোবাইল ব্যাংকিং সেবার বিপরীতে যে চার্জ নেয়া হচ্ছে এটি গ্রাহকদের গলা কাটার মতো। এই চার্জ অবিলম্বে কমানো উচিত। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
তবে টাকা পাঠানোর খরচ কমাতে সার্ভিস চার্জের হার কমানোর উদ্যোগ নেয় ডাকবিভাগ। ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের বিভিন্ন অনলাইন সেবার মাধ্যমে সারা দেশে টাকা পাঠানোর খরচ প্রায় ৭২ শতাংশ কমায় তারা। আগে টাকা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ দিতে হতো। এখন তা কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে।
নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ই-মানি অর্ডারের মাধ্যমে ১০০ টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত পাঠাতে খরচ হবে মাত্র ১০ টাকা। এরপর সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতি হাজারে লাগবে মাত্র ৫ টাকা করে। যেখানে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ নেয়া হচ্ছে ১ দশমিক ৮০ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি হাজারে ১৮ টাকা।
ডাকবিভাগের এই ভোক্তাবান্ধব উদ্যোগ অচিরেই কার্যকর হবে বলে জানা গেছে। এটি ইতিমধ্যে ডাকঘরের শাখা অফিসগুলোতে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে সারা দেশে অনলাইনের মাধ্যমে টাকা পাঠানো যেমন সহজ হবে, তেমনি এর খরচও কমবে। উপকৃত হবেন গ্রাহকরা, বাড়বে টাকা লেনদেন। শক্তি পাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।