রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিকল যন্ত্রপাতি দীর্ঘদিন ধরে সচল না হওয়ায় এক ধরনের অচল অবস্থা তৈরি হয়েছে। তাছাড়া দিন দিন বেড়েই চলেছে সেবাপ্রত্যাশী মানুষের দুর্ভোগ।
সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, হাসপাতালের এনজিওগ্রাম, ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন, সিটি স্ক্যান, কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস মেশিন, অপারেশনের যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্তকরণ মেশিনসহ বিভিন্ন মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। অচল হয়ে পড়ে থাকা এসব যন্ত্রপাতি কবে নাগাদ সচল হবে তাও জানা নেই হাসপাতালের পরিচালক। তবে লকডাউন পরিস্থিতির কারণে অচল যন্ত্রপাতি ভালো করতে দেরি হচ্ছে ।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডায়ালাইসিস বিভাগটি ২৫ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। কিডনি রোগে আক্রান্তরা তিন সপ্তাহেরও বেশি ডায়ালাইসিস করতে পারছেন না। ৮ এপ্রিল থেকে ডায়ালাইসিস মেশিনগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে ওয়ার্ডটি রোগী শূন্য হয়ে আছে।
রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতালে করোনা ভীতির কারণে এখন চিকিৎসকের দেখা মিলছে না। ঠিক মতো প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিতে সেবিকাদের কাছে ধরনা দিতে হচ্ছে তাদের। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হাসপাতালে আপাতত কোনো ব্যবস্থা নেই। অর্থাভাবে সরকারি হাসপাতালে আসা মানুষগুলোকে এখন বাইরে থেকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হচ্ছে। যার ব্যয়ভার বহন করা অনেকের পক্ষে কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার কেউ কেউ সেবা না পেয়ে বাধ্য হয়েই হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল করিম বলেন, দুটি মেশিন নষ্ট হওয়ায় ডায়ালাইসিস করা যাচ্ছে না। ঢাকা থেকে প্রকৌশলীরা মেশিন মেরামতের জন্য আসবেন, তারা দেখার পর বলা যাবে কবে নাগাদ কিডনি ওয়ার্ড চালু করা যাবে।
বিমল চন্দ্র বর্মন নামের এক কিডনি রোগী ৯ দিন ধরে ডায়ালাইসিস করাতে পারছেন না। তিনি বলেন, হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগে গত ২৩ এপ্রিল ভর্তি হয়েছি। ৯ দিন ধরে শুধু শুনছি, মেশিন দ্রুত ঠিক করা হবে। কিন্তু অচলাবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এভাবে ডায়লাইসিস করাতে না পারলে তো চিকিৎসার অভাবে মারা যেতে হবে।
ডায়ালাইসিসের অচলাবস্থার কথা স্বীকার করে মেশিন মেরামত করতে না পারার পেছনে লকডাউনকে দুষছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, হাসপাতালের অনেক যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকগুলোর মেয়াদ শেষ হয়েছে। জোড়াতালি দিয়ে কোনো রকম চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন, সিটি স্ক্যান মেশিন হ্যান্ডওভার করা হয়েছে। অল্প দিনের মধ্যে চালু করা হবে।
এ ছাড়া কিডনি বিভাগের দুটি মেশিন মেরামত করার জন্য ন্যাশনাল ইলেকট্রো মেডিকেল ওয়ার্কশপকে জানিয়েছি। রোববার দুপুরে তারা এসে মেশিনের কি কি নষ্ট তা দেখেছেন। এখন আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে। আশা করছি এই সংকট আর থাকবে না।