ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ ও আটার দাম বাড়তি ছিল। তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দেওয়া এপ্রিল মাসের ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, মার্চ মাসের তুলনায় খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার কমেছে। মার্চ মাসে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এপ্রিলে তা কমে হয়েছে ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ। অর্থাৎ মাসে মাসে ১০০ টাকার খাদ্য পণ্যে ৬ টাকা ৩৪ পয়সা বাড়লেও এপ্রিল মাসে তা বেড়েছে ৬ টাকা ২৪ পয়সা।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ হয়েছে। গত মাসে এই খাতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।
এছাড়া বাড়িভাড়া, আসবাবপত্র, গৃহস্থালি, চিকিৎসাসেবা, পরিবহন, শিক্ষা উপকরণ এবং বিবিধ সেবাখাতের মূল্যস্ফীতির হার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ হয়েছে, যা গত মার্চ মাসে ছিল ৬ দশমিক ২২ শতাংশ।
সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দেওয়া মার্চ মাসের ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে। বর্তমানে বাজারে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা দরে বিক্রি হলেও এই তথ্য দেখা যায়নি। বিবিএসের তথ্যে দেখা গেছে, এপ্রিল মাসে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ১৭০ টাকা ৪২ পয়সা। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যা দেখানো হয়েছে ১৬৯ টাকা ৬৫ পয়সা। তবে ২০২০-২১ অর্থবছরে এই পণ্যটি ১১৮ টাকা ৭৪ পয়সার মধ্যে ছিল বলে দাবি করেছে বিবিএস।
বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়লেও কীভাবে আপনাদের হিসাবে কমলো?- এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, মূল্যস্ফীতি একটা সামগ্রিক হিসাব। যেমন সবজিসহ কিছু কাঁচা পণ্যের দাম কমছে। অনেক খাত বাড়ে, অনেক খাত কমে। সব মিলিয়ে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার হিসাব করা হয়। এই হিসাবে গত মাসের তুলনায় (মার্চের তুলনায় এপ্রিলে) কমেছে।
প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, বছরওয়ারি পয়েন্ট টু পয়েন্টের ভিত্তিতে মে মাসে ডাল, চিনি, মুড়ি, মাছ, মাংস, ব্রয়লার মুরগি, ফল, তামাক, দুগ্ধজাতীয় পণ্য এবং অন্যান্য খাদ্য সামগ্রীর দাম বেড়েছে। মাসওয়ারি ডিম, শাক-সবজি ও মসলা জাতীয় পণ্যের দামও কমেছে।
বেগুনে আগুন: বিবিএসের হিসাবে, এক মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১৯ টাকা ২৬ পয়সা বেড়ে ৬৭ টাকা ৩৬ পয়সা হয়েছে বেগুনের দাম। এছাড়া প্রতি লিটার প্যাকেটজাত তরল দুধ ৬ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা ২৪ পয়সা হয়েছে। তবে আলুতে ৩ টাকা কমে ২২ টাকা ১৫ পয়সা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাসের ব্যাবধানে প্রতিকেজি মিনিকেট চালে এক টাকা বেড়ে ৬৯ টাকা ১১ পয়সা হয়েছে। তবে স্থিতিশীল আছে আটা, প্রতি কেজি ৪৪ টাকা ৯৬ পয়সা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে এপ্রিল মাসেও গ্রামের তুলনায় শহরে মূল্যস্ফীতির হার কম। এপ্রিল মাসে গ্রামে যেখানে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ, সেখানে শহরে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সুতারং শহরের থেকে মূল্যস্ফীতির চাপে রয়েছেন গ্রামীণ জনগোষ্ঠী। এপ্রিল মাসে মজুরি সূচক কিছুটা বাড়তি, ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ। এর আগের মাসে (মার্চে) যা ছিল ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।