ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক
পণ্য সরবরাহের কথা বলে নেওয়া টাকার একটি হিসাব ইভ্যালির সার্ভারে পেয়েছে পুলিশ। এতে দেখা গেছে, গ্রাহক এবং বিনিয়োগকারী মিলে ৯৫০ কোটি টাকারও বেশি দেনা আছে প্রতিষ্ঠানটির।
ইভ্যালিতে মোটা অঙ্কের বিনিয়োগকারী প্রায় শতাধিক, যারা বিভিন্ন সময় পণ্য পেয়ে পুনরায় বিনিয়োগ করেছেন। মূলত অফারের ফাঁদ পেতে ওই গ্রাহকদের আটকে রেখেছিল ইভ্যালি।
পুলিশ তদন্তে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের কাছ থেকে যে অর্থ নিয়েছে সে তথ্য সার্ভারে থাকলেও খরচে গোঁজামিল করেছে। অর্থ ব্যয়ের লিখিত যে জবাব ইভ্যালি দিয়েছে তা যাচাই করা হচ্ছে।
এ ছাড়াও কিছু প্রতিষ্ঠান সরাসরি ইভ্যালির সঙ্গে চুক্তি করে পণ্য নিয়ে ব্যবসা করার চেষ্টা করেছিল। তাদের তথ্যও পাওয়া গেছে। ইভ্যালির অর্থ আত্মসাতের চিহ্ন মিলেছে তাদের সার্ভারেই, যা পুলিশ এখন যাচাই-বাছাই করছে।
যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে ইভ্যালি পণ্য নিয়েছিল তারাও শুধু গ্রাহকরা পাবে ৭০০ কোটি টাকার বেশি এছাড়াও বিনিয়োগকারীরা প্রায় ২৫০ কোটি টাকা পাবে। সব মিলিয়ে প্রাথমিক তদন্তে ইভ্যালির দেনা ৯৫০ কোটি টাকারও বেশি।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ‘ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মো. রাসেল বিভিন্ন প্রশ্নের লিখিত জবাব দিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্য ও আমাদের তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।’
গত ১৬ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় একজন গ্রাহক মামলা দায়ের করলে সেদিন বিকালে মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে ইভ্যালির সিইও রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে (চেয়ারম্যান) গ্রেফতার করে র্যাব।
১৭ সেপ্টেম্বর গুলশান থানার মামলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলামের আদালত আসামিদের তিন দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশ ইভ্যালির মামলা তদন্তে করতে গিয়ে রাসেল ও নাসরিনকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। পুলিশ যা জানতে চেয়েছে, রাসেল কোনও না কোনও উত্তর দিয়েছেন। রাসেল পুলিশকে বলেন, ‘আমি গতানুগতিক ব্যবসার বাইরে গিয়ে বেশি ছাড়ে পণ্য বিক্রি করেছি। অফার দিয়েছি। এর বাইরে কোনও অপরাধ করিনি।’
রাসেল ও নাসরিনকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদও করেছে পুলিশ। এ সময় দুজনই ইভ্যালির বিষয়ে নিজেদের নিরপরাধ দাবি করেন। তারা বলেন, তারা ইভ্যালির অর্থ নয়ছয় করেননি। লস দিয়ে পণ্য বিক্রির এই প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করে ব্র্যান্ড তৈরি করে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার বিক্রি করে তা পুষিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের।