ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে ই-কমার্সে আটকে থাকা গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তির পর শুনানি শেষে যেখানে যে টাকা আটকে আছে, তা গ্রাহকদের ওয়ালেটে রিফান্ড করা হবে। ই-ক্যাবকে সাতদিনের মধ্যে মার্চেন্টদের তালিকা দিতে বলা হয়েছে। তারা যদি তালিকা প্রোভাইড (সরবরাহ) না করেন, তাহলে গ্রাহকদের ওয়ালেটে টাকাগুলো ফেরত দেওয়া হবে।’
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ই-কমার্স গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া এবং ডিজিটাল কমার্সের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য সংঘটিত লেনদেন সৃষ্ট ভোক্তা বা বিক্রেতা অসন্তোষ, প্রযুক্তি সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে গঠিত টেকনিক্যাল কমিটির চতুর্থ সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আজকের সভায় কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো হলো- গ্রাহকদের যে টাকা বিভিন্ন পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকা আছে, সেগুলো রিলিজ করে দেওয়া হবে। তার আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। বিভিন্ন কোম্পানির যদি কোনো কিছু বলার থাকে, আমরা শুনবো। তারপর পেমেন্ট গেটওয়ের টাকাগুলো ফেরত দেওয়া শুরু করা হবে।’
শফিকুজ্জামান বলেন, ‘পেমেন্ট গেটওয়ে তাদের মার্চেন্টদের অফিসিয়ালি জানাবে। তাদের যদি কোনো গ্রাহকদের তালিকা থাকে, সেই তালিকা দিতে হবে। এজন্য তাদের সাতদিন সময় দেওয়া হবে। এর মধ্যে তারা যদি তালিকা না দেয় তাহলে গ্রাহকদের ওয়ালেটে টাকা ফেরত দেওয়া হবে। আটকে থাকা সব টাকা এভাবে রিলিজ করে দেবো। দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত হচ্ছে ই-কমার্সের অনেক প্রতিষ্ঠান, যার মধ্যে আজ দুটি প্রতিষ্ঠানের টাকা রিলিজ করেছি। এর আগে ১০টি প্রতিষ্ঠানের টাকা রিলিজ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১২টি প্রতিষ্ঠানের টাকা রিলিজ করা হলো। এর বাইরেও দু-একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা ইতিবাচকভাবে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এ অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘বিভিন্ন তালিকা আমাদের হাতে এসেছে, যারা এখনো গাঢাকা দিয়ে আছেন। এমনও আছে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের পর আবারও হারিয়ে গেছে। সেসব প্রতিষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ তালিকা ই-ক্যাবের মাধ্যমে আগামী ১০ দিনের মধ্যে চাওয়া হয়েছে। ই-ক্যাব যাচাই-বাছাই করে একটি অফিসিয়াল তালিকা আমাদের দেবে। সেই তালিকা আমরা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবো। সেখানে পেমেন্ট দুই লাখ থেকে ১০ কোটি টাকা বাকি থাকতে পারে। তখন পুলিশ যদি তাদের আইনের আওতায় আনে, তাহলে আইনগতভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বলতে পারি, আমরা একটা তালিকা পুলিশের কাছে দেবো, তবে সংখ্যাটা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
কতগুলো কোম্পানির টাকা গ্রাহকদের দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কিউকমের ৫৯ কোটি টাকার মধ্যে ৫১ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। আলেশা মার্টের ৪২ কোটির মধ্যে ২০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। বাকিগুলো ছোট ছোট। তাই বলা যায়, সব মিলিয়ে ৭৩ কোটি টাকার বেশি ফেরত দেওয়া হয়েছে।’
ইভ্যালি নিয়ে কোনো আশার দিক আছে কি না, জানতে চাইলে অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘ইভ্যালির বিষয়ে হাইকোর্ট কমিটি করে দিয়েছেন। কমিটিতে যারা আছেন, তারা এ বিষয়টি দেখছেন। নিউজে দেখেছি, ইভ্যালির চেয়ারম্যান জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। ইভ্যালি নিয়ে কী করবে না করবে- সেটা আমরা জানি না। মূলত যে কমিটি আছে, তারাই যা করার করবে। কিউকমের রিপন মুক্ত হয়েছেন। তাদের টাকা আটকে আছে ফস্টারে। তার সঙ্গে বসে আটকে থাকা টাকা রিলিজ করা হবে।’