ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:
দেশে করোনাকালে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যাপক ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়েছে। যার ৮০ শতাংশই অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
মঙ্গলবার সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) আয়োজিত ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’ শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। তাতে অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহারের ক্ষতির দিকটি তুলে ধরা হয়।
গবেষণায় পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মুগদা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রুবিনা ইয়াসমিন বলেন, করোনা চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের তেমন কোনও ভূমিকা পাওয়া যায়নি। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার হয়েছে সারাবিশ্বে।
গবেষণায় প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, দেশে কোভিড আক্রান্ত ৮৭ শতাংশের বেশি রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন ছিল সর্বোচ্চ ৭ শতাংশের। মানে অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার হয়েছে ৮০ শতাংশ।
অধ্যাপক রুবিনা জানান, করোনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ওষুধের ৭০ শতাংশই ছিল অ্যান্টিবায়োটিক। আইসিইউতে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের হার ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ। এর মধ্যে অ্যাজিথ্রোমাইসিন ও সেফ্টরিয়াক্সনের ব্যবহার হয়েছে ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ।
আবার হাসপাতালে ভর্তির আগে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই এমন অ্যান্টিবায়োটিক ৩৩ শতাংশ রোগী সেবন করেছেন বলে গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন।
অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহারের খারাপ দিক তুলে ধরে অধ্যাপক রুবিনা বলেন, এটা অবশ্যই অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স বাড়াবে।
অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার মতো জীবাণু প্রতিরোধ করলেও এর যথেচ্ছ ব্যবহার জীবাণুর ক্ষমতা দিন দিন বাড়িয়ে তুলছে বলে গবেষকরা সতর্ক করে আসছেন।
গবেষণায় নেতৃত্ব দেন আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেন।
সেমিনারে অংশ নিয়ে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, যে হারে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হয়েছে তা আগামী দিনে ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. তাহমিনা শিরীন।