ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যু ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রকে আমরা নো পেমেন্ট নো ইলেকট্রিসিটি হিসেবে রাখতে চাই।
সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ‘কুইক রেন্টাল: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন জ্বালানি উপদেষ্টা।
বাংলাদেশ ইনডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশন (বিপপা)-এর সহযোগিতায় ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স অব বাংলাদেশ (এফইআরবি) আয়োজিত ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষক গোলাম মোয়াজ্জেম।
জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, এখন আমাদের বিদ্যুতের চাহিদা কম। গরমের সময় সর্বোচ্চ চাহিদা কত তার ওপর নির্ভর করে ক্যাপাসিটি রাখতে হবে। সেই হিসাবে এখন আমাদের ২০ হাজার মেগাওয়াট ক্যাপাসিটি থাকা দরকার। জ্বালানির বিষয়টিও চিন্তায় রাখতে হবে।
ড. তৌফিক চৌধুরী বলেন, বড় বড় প্রকল্প হচ্ছে। স্পেশাল ইপিজেড হচ্ছে। বিদ্যুতের এখন যে চাহিদা, সেটার বেশিরভাগই বাসাবাড়ির। কিন্তু সামনে শিল্পের চাহিদা বাড়বে।
পিডিবি সদস্য মাহবুবুর রহমান জানান, এখন দেশে যে রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে তা থেকে ২৭৪ মেগাওয়াট এবং কুইক রেন্টাল থেকে ৩৯৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছি। এই কেন্দ্রগুলো ২০২৪ সালে অবসরে যাওয়ার কথা। কিন্তু কোনও ক্যাপাসিটি-কস্ট ছাড়া যদি এগুলো রেখে দেওয়া যায় তাহলে সরকার লাভবান হবে।
তিনি আরও বলেন, রেন্টালগুলো সব গ্যাসভিত্তিক। কুইক রেন্টালের কিছু গ্যাস, কিছু ফার্নেস অয়েল-চালিত। যেহেতু এখন জ্বালানি আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হচ্ছে সেই হিসাবে এই বিদ্যুতের দাম কম পড়বে। জরুরি প্রয়োজনের সময় কেন্দ্রগুলো কাজে আসতে পারে।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আমাদের জিডিপিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। জরুরি প্রয়োজনে ২০০৯ সালের পর থেকে এই কেন্দ্রগুলো অনিবার্য ছিল, এখন নেই। তবে ব্যবহার করলে লাভ হবে কিনা তা বিবেচনা করতে হবে। দামের কথা ভেবেও সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সিপিডির গবেষক গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্যোক্তারা ব্যবসা করেছেন। এখন তাদের রাখার কোনও যুক্তি নেই’
বিআইডিএস-এর সাবেক মহাপরিচালক মুস্তফা কামাল মুজেরী বলেন, রেন্টাল ও কুইক রেন্টালে যে বিনিয়োগ হয়েছিল, তা এতদিনে উঠে এসেছে। ফলে যদি কোনও কেন্দ্রের অর্থনৈতিক উপযোগিতা থাকে তবে সেগুলোকে আইপিপি হিসেবে রেখে দিতে হবে।
পিডিবি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বলেন, এখন যে ২২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের পরিকল্পনা করেছি, সেই তুলনায় ১৪ হাজার মেগাওয়াট কিন্তু বেশি নয়। প্রতি ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের জন্য কমপক্ষে ১০০ মেগাওয়াট উৎপাদনের ক্ষমতা থাকতে হবে। সেই হিসাবে রিজার্ভ বিদ্যুৎ কম। নবায়নযোগ্য জ্বালানির মধ্যে সোলার পাওয়ারের কথা আসে সবার আগে। এর জন্য স্টোরেজ ক্যাপাসিটি থাকা দরকার। কিন্তু এর খরচ ডিজেল চালিত বিদ্যুতের চেয়ে বেশি। এটা নিয়েও ভাবতে হবে।
এফইআরবির নির্বাহী পরিচালক শামীম জাহাঙ্গীরের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিপপার সভাপতি ইমরান করিম, সহ-সভাপতি নাভিদুল হক ও এফইআরবি চেয়ারম্যান অরুন কর্মকার প্রমুখ।