কেজিদরে আর বিক্রি করা যাবে না তরমুজ। রাজশাহীতে খুচরা কিংবা পাইকারি বাজারে কেজিদরে তরমুজ বিক্রি করলে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসনের দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আড়তে আড়তে গিয়ে এ কথা জানিয়ে এসেছেন।
মহানগরীর শালবাগানে তরমুজের আড়তগুলোতে পাইকারিতে দুই হাজার টাকা মণ দরে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা তা কিনে নিয়ে গিয়ে বাজারে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। রাজশাহীর আড়তে তরমুজ আসে বরগুনা, খুলনা ও চুয়াডাঙ্গা থেকে।
ক্রেতারা অভিযোগ করছেন, চাহিদা থাকায় সিন্ডিকেট করে তরমুজের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে।বাজারে এবার তরমুজের দাম বেশি হওয়ায় তা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। অভিযোগ পেয়ে বাজারে নামেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিত সরকার ও কৌশিক আহমেদ। তাদের সঙ্গে জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেনও ছিলেন। তারা মহানগরীর শালবাগানে তরমুজের আড়তগুলোতে যান। তাদের দেখে কোনো কোনো আড়তদার আড়তের বেড়া লাগিয়ে পালিয়ে যান। তবে কর্মকর্তারা দুটি আড়তে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন।
এক সময় রাজশাহী-নাটোরে প্রচুর তরমুজ উৎপাদন হতো। দিনে দিনে তরমুজের আবাদ কমে এসেছে। রাজশাহীতে এ বছর মাত্র ১৯ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। জেলার চাহিদা মেটাতে বাইরের থেকে তরমুজ আসে বলে বাজার থাকে আড়তদারদের নিয়ন্ত্রণে। চাহিদা বেশি থাকলেই তারা দাম বাড়িয়ে দেন। এতে মধ্যস্বত্ত্বভোগী এসব আড়তদারেরাই লাভবান হয়ে থাকেন।
মামা-ভাগ্নে ফল ভাণ্ডারে গিয়ে দুই ম্যাজিস্ট্রেট সব আড়ত মালিকদের ডাকেন। তারপর জানিয়ে দেন, তরমুজের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নেই। তাই বুধবার থেকে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করা যাবে না। পিস হিসেবে বিক্রি করতে হবে। তাহলে ক্রেতারা দাম করার সুযোগ পাবেন। দামও তাহলে কমে আসবে।
এ সময় মামা-ভাগ্নে ফল ভাণ্ডারের মালিক শাহিন হোসেন কালু বলেন, বরগুনা, চুয়াডাঙ্গা, খুলনা থেকে যেসব ব্যবসায়ীরা তরমুজ এই আড়তে আনেন তাদের কেজি দরে মূল্য পরিশোধ করতে হয়। তাই পিস হিসেবে বিক্রি করতে হলে কয়েক দিন সময় লাগবে। আড়তদাররা বলেন, যদি পিস করে তরমুজ বিক্রি হয় তাহলে একটু সময় নিয়ে তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করবেন।
তখন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেন, তার মানে বাজার নিয়ন্ত্রণের সুযোগ ছিল এবং আছে। কিন্তু আপনারা নিয়ন্ত্রণ করেননি ইচ্ছে করেই। তাই বুধবার থেকেই পিস হিসেবেই তরমুজ বিক্রি করতে হবে।