খুলনা জেলা প্রতিনিধি
খুলনার দাকোপ, বটিয়াঘাটা, কয়রা, পাইকগাছা, ডুমুরিয়ার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে তরমুজ আর তরমুজ। নতুন স্বপ্নে বিভোর তরমুজ চাষিরা।
যেখানে চোখ যাবে, সেখানেই তরমুজ। ভরা মৌসুমজুড়ে চলছে পরিচর্যা, কাটা, পরিবহন ও বাজারজাত করা নিয়ে চাষিদের ব্যস্ততা।
যথা সময়ে ভোক্তার হাতে তুলে দিতেই চলছে তরমুজ নিয়ে ব্যস্ততা। ক্ষেত, পথ-ঘাট, ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ড ভ্যান, ট্রলার যত্রযত্র তরমুজের দেখা মিলছে।
বর্তমানে প্রচণ্ড তাপদাহ ও রমজানে তরমুজের চাহিদা বেড়েছে। সে সঙ্গে পরিবহন সঙ্কট না থাকায় ভালো দামে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে স্বল্প সময়ে বেশি লাভ হওয়ায় কয়েক বছর ধরে তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। গত বছর তরমুজে ব্যাপক লাভ হওয়ায় এবার বেড়েছে তরমুজ চাষ। দাকোপ ও বটিয়াঘাটায় এবার পতিত জমিতেও তরমুজ চাষ করেছেন অনেকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, খুলনা জেলায় এবার সাড়ে প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। এর বাজার মূল্য প্রায় ১ হাজার ৫০ কোটি টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের তথ্য মতে, এ বছর জেলায় ১৩ হাজার ৯৯০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি দাকোপে ৭ হাজার ৬২৫ হেক্টরে। এছাড়া বটিয়াঘাটায় ৩ হাজার ৬০০, পাইকগাছায় ১ হাজার ৫১০, কয়রায় ৮৯৫, ডুমুরিয়ায় ৩৫০, রূপসায় ৫, তেরখাদায় ৩ ও ফুলতলা উপজেলায় ১ ও মেট্রো থানায় আরও ১ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে।
দাকোপের উড়াবুনিয়া তরমুজ চাষি সাধান জোয়ারদার বলেন, ১০ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রথম দিকে প্রতি বিঘা ১ লাখ টাকা করে বিক্রি করতে পেরেছি। এখন একটু কমে গেছে।
সিটিবুনিয়ায় তরমুজ চাষি দ্বীপক রায় বলেন, ৪ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। আমি এখনও বিক্রি করিনি। তরমুজ বিক্রির উপযোগী হয়েছে। ব্যাপারীদেরও বেশ আনা গোনা রয়েছে। ঈদের পর বিক্রি করবো।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর ররহমান বলেন, দাকোপ, পাইকগাছা, কয়রা, বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়ায় তরমুজ চাষ করা হয়েছে। এবার খুলনায় প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। ১ হেক্টরে ৭.৫ বিঘা। সে হিসেবে ১ লাখ ৫ হাজার বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। প্রতি বিঘায় ১ লাখ টাকার তরমুজ রয়েছে। সে হিসেবে মোট ১ হাজার ৫০ কোটি টাকার তরমুজ চাষ হয়েছে এবার। গত বছর প্রায় ৬০০ কোটি টাকার তরমুজ উৎপাদন হয়েছিল খুলনায়।