নিজস্ব প্রতিবেদক:
গণপরিবহণে নৈরাজ্যের জন্য দেশের সড়কে মশা-মাছির মত মানুষ মরছে বলে মন্তব্য করেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরুল ইমাম।
রবিবার জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি এবং গণপরিবহনের নৈরাজ্য শীর্ষক একটি অনলাইন আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।
ভার্চুয়াল এই আলোচনা সভায়, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। গণপরিবহনে চলাচল এবং ভোক্তা অধিকার নিয়ে নানান বিষয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।
আলোচনা সভায় সঞ্চালনা করেন কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ সাজিদুল ইসলাম।
অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, মশা-মাছি যেমন অল্পতেই মারা যায়। ঠিক তেমনই সড়কের নৈরাজ্যের কারণে মানুষও গণপরিবহনের ধাক্কায় অল্পতের যেখানে সেখানে মারা যাচ্ছেন।
সড়কের নৈরিজ্য নিয়ে তিনি বলেন, সড়কে চরম নৈরাজ্য বিরাজ করছে। মানুষ নিশ্চিন্তে ঘরের বাহিরে বের হতে পারছে না। আমি যে বাহিরে থেকে নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারবো এর কোন গ্যারান্টি নেই। সড়কে মশা-মাছির মত মানুষ মরছে। সড়কে কখনও হেলপার বাস চালাচ্ছে, কখনও বাস চালকের বন্ধু বাস চালাচ্ছে। এরা কেউই দক্ষ নয়। এই নৈরাজ্য কোন অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা বন্ধ করা না গেলে মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার আর থাকে না।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের দেশেও হঠাৎ করেই তেলের দাম বাড়িয়ে দেয়া হলো। কিন্তু পরবর্তীতে যখন বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমে গেল, তখন কিন্তু দেশে আর তেলের দাম কমানো হয়নি। এটা ভোক্তা পর্যায়ে একটা আঘাত হিসেবে দেখা যেতে পারে। করোনাকালে দেশের জনগণের আর্থিক অবস্থা এমনিতেই খারাপ তার উপর জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করা কাম্য ছিল না। সরকারের এই সিদ্ধান্ত আরও ভেবেচিন্তে নেয়া উচিত ছিল।
তিনি বলেন, জ্বালিনির মূল্য বৃদ্ধির ফলে সকল নিত্য পন্যের দাম বেড়ে যায়। তাই আরও ভেবে চিন্তে সরকারের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত ছিল। এখন তো বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে গেছে তাহলে এখন দেশের বাজারে দাম কমছে না কেন? এতে কার লাভ হলো?
তিনি বলেন, যানবাহন সেবাকেন্দ্রীক না হয়ে যদি লাভ জনক হয় তাহলে তাদের চালকদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগীতা থাকবে। আর এই প্রতিযোগীতাই দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ হয়ে দাড়ায়। তবে এই পরিবহন ব্যবস্থা যদি সকারের অধিনে থাকে তবে লাভ কেন্দ্রীক বিষয়টি থাকে না। এটি তখন সেবা কেন্দ্রীক হয়ে যাবে। সরকারের কাজই হচ্ছে সেবা করা। এছাড়া চালকদের মধ্যে প্রতিযোগীতার বিষয়টিও আসবে না।
আশাবাদের কথা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, দেশে যে আধুনিক গণপরিবহনের যে ব্যবস্থা চালু হচ্ছে, যেমন মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে। এসবের মাধ্যমে হয়তো সড়কে কিছুটা নিরাপত্তা আসবে। তবে আমাদের দেশের সনাতনি এই সড়ক ব্যবস্থায় গণপরিবহন বাড়ানো কোন ভাবেই সম্ভব হবে না। ফলপ্রসু হবে না।
আরইউ