নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ডিজিটাল মাইক্রোফাইন্যান্সের নামে অবৈধ সুদের কারবারে জড়িতরা ৩ থেকে ২৫ হাজার টাকা লোনের কথা বলা হলেও দেয়া হতো মাত্র ২১৫০ টাকা। অথচ লোক গ্রহীতাকে শোধ করতে হতো ৩হাজার টাকা। আর এটি পরিচালনা হতো চীনের সার্ভার থেকে।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সুদ কারবারের অ্যাপগুলোর মধ্যে রয়েছে- টাকাওয়ালা (পারসোনাল লোনস অনলাইন), র্যাপিড ক্যাশ, আমার ক্যাশ, ক্যাশ ক্যাশসহ আরও অনেক অ্যাপ। এসব অ্যাপ প্রায় ৫০ হাজার থেকে ৫০ লাখ মানুষ ডাউনলোড করেছে। সবাই ব্যবহার না করলেও বিশাল একটা অংশ এসব অ্যাপের মাধ্যমে প্রতারিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক-ইউটিউবে ক্ষুদ্র, জামানতবিহীন ঋণ ও চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে অনৈতিকভাবে সুদের ব্যবসায় করতো তারা। মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে তারা গ্রাহকদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডাটা সংগ্রহে রাখতো। এ ব্যবসার মূলে রয়েছে কিছু চীনা নাগরিক। এদের ব্যবহৃত অ্যাপ মূলত চীনের সার্ভার থেকে পরিচালিত হতো। ফলে কত টাকা কিংবা কতজন এ ব্যবসার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা আমরা এখনো জানতে পারিনি। এসব কাজ তারা মূলত দেশীয় এজেন্টদের মাধ্যমে করে থাকে।
হাফিজ আক্তার বলেন, যদিও বলতো তিন থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো লোন নিতে পারবে কিন্তু তারা তিন হাজার থেকে বেশি লোন দিতো না। প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের ছোট অ্যামাউন্টের টাকা দিয়ে পয়েন্ট অর্জন করতে হতো। প্রতি সপ্তাহে তাদের বিভিন্ন অ্যামাউন্টের টাকা দেওয়া হতো এবং সাপ্তাহিকভাবেই তাদের সুদসহ টাকা পরিশোধ করতে হতো। তারা প্রথমেই নানা খরচ যেমন অ্যাপ্লিকেশন ফি, সার্ভিস চার্জ এসব দেখিয়ে টাকা কেটে রেখে বাকি টাকা দিতো। কিন্তু গ্রাহককে পরিশোধ করতে হতো পুরো টাকাই। যেমন কোনো যদি গ্রাহক তিন হাজার টাকা নিতে চায় তাহলে সে পাবে ২১৫০ টাকা কিন্তু তাকে তিন হাজার টাকাই পরিশোধ করতে হতো।
এর আগে ডিএমপির গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ ইমানুয়েল অ্যাডওয়ার্ড গোমেজ, আরিফুজ্জামান, শাহিনুর আলম ওরফে রাজীব, শুভ গোমেজ ও মো. আকরামগ্রেফতার করে । এসময়ে তাদের কাছ থেকে একটি এলিয়ন গাড়ি, নয়টি মোবাইল ফোন, নয়টি সিম কার্ড, চারটি ল্যাপটপ, চারটি বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই উদ্ধার করা হয়েছে।