শত ব্যস্ততার মাঝেও পরিবার, প্রিয়জন কিংবা বন্ধুদের সাথে ভালো সময় কাটাতে বাইরে খেতে যান অনেকেই। তবে সেই খাবার যদি হয় বাসি, দুর্গন্ধযুক্ত অথবা খাবারে অনাকাঙ্ক্ষিত থাকে কোন বস্তু, তখন সেই সময়টি যেন আর ভালো কাটে না।
ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্রে দাখিল করা অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায় উত্তরার ক্যাফে দর্বারের অসততার গল্প।
বর্তমানে উত্তরায় বসবাসরত ডাঃ মোঃ সামিউল হাসান (শুভ্র) ক্যাফে দর্বারের বিরুদ্ধে খাবারে চুল, দুর্গন্ধ, বিলে ধোঁকাবাজি এবং ক্যাফে কর্তৃপক্ষের খারাপ ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি ১৯.০৫.২০২১ তারিখ আনুমানিক রাত ৮.০০ টায় উত্তরার ক্যাফে দর্বার এ স্ত্রীসহ খেতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমি সুপ, অন্থন, ফ্রেন্স ফ্রাই সহ আরো কিছু অর্ডার করেছিলাম। থাই সুপে চুল পাওয়ায় সেটি পরিবর্তন করে দিতে বললে প্রথমে তারা সেটি পরিবর্তন করে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। কারণ হিসেবে তারা বলে এই চুল নাকি তাদের নয়। পরে তারা সেটি আমার কড়াভাবে বলার কারণে পরিবর্তন করে দিতে বাধ্য হয়। এছাড়া সুপ, অন্থন ও ফ্রেন্স ফ্রাই এ যে তেলে ভাজা হয়েছিল সেটি দুর্গন্ধযুক্ত ছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘খাবার শেষে সদস্য কার্ড দেখিয়ে বিল দিতে বলি যেহেতু সদস্য কার্ডে ১০% ছাড় পাওয়া যায়। ওয়েটার জানায় তাদের ১৫% ছাড় চলছে তাই সদস্য কার্ড লাগবে না। তারা আমাকে একটা হাতে লেখা ৭৮৫ টাকার বিল ধরিয়ে দেয়। যেটা তাদের রেস্টুরেন্টের কাগজ ছিল না এবং আমার বিল কপি নিচে ১৫% ছাড় লিখা ছিল না। কাগজের ছবি তোলার আগেই সেটা তারা আমার কাছ থেকে নিয়ে জানায়- তারা যে ১৫% ছাড় দিচ্ছে সেটি ভ্যাট না নিয়ে ছাড় দিচ্ছে। রেস্টুরেন্টের কপি চাইলে তখন তারা আমাকে কম্পিউটারের ১৫% ছাড় ব্যতীত বিল ধরিয়ে দেয়। কাউন্টারের ম্যানেজারের কাছে গেলে আমাকে দেখানো হয়- খাবারের বিল ৯৪৮ টাকা, ১০% সার্ভিস চার্জ ও ১৫% ভ্যাটসহ সর্বসাকুল্যে ১১৪২ টাকা আসে। তখন আমি তাদেরকে আমার সদস্য কার্ড দেখালে তারা আমাকে জানায় কার্ডটি দুই বছর পুরনো। কিন্তু কার্ডে কোন মেয়াদ লেখা ছিল না। আমি ক্যাশ এ পেমেন্ট ক্লিয়ার করে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে আসি।’
অভিযোগপত্রে তিনি বলেন, ‘তারা নিরবে ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে ও মানুষকে নিন্নমানের খাবার পরিবেশনের মাধ্যমে ঠকাচ্ছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
ভোক্তা স্বার্থে ভোক্তাদের বিভিন্ন আইন সম্পর্কে জানা উচিত। যেমন- নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ (২০১৩ সালের ৪৩ নং আইন) এর ৯০টি ধারা, ১৩টি অধ্যায়, ৩৩টি খাদ্য ভেজাল ও খাদ্য-সংক্রান্ত বিষয়ক সংজ্ঞা এবং নিরাপদ খাদ্য বিধিমালা ২০১৪ প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এবং নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ অনুযায়ী ভোক্তা অধিকারবিরোধী কিছু কার্য হলো-
- প্রদত্ত মূল্যের বিনিময়ে প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রি বা সরবরাহ করা।
- খাদ্যে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর যেকোনো বিষাক্ত দ্রব্যের ব্যবহার করা।
- প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিম্নমানের খাদ্য উৎপাদন করা।
- খাদ্যদ্রব্যের গুণগত মানবিষয়ক যেকোনো ধরনের মিথ্যা বিজ্ঞাপন প্রস্তুত, মুদ্রণ বা প্রচার থেকে বিরত থাকা।