ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক
ই-কমার্স সাইট ‘ধামাকা’র শীর্ষ ছয় ব্যক্তি সাউথ ইস্ট ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ডাচ বাংলা ব্যাংকে লেনদেনের মাধ্যমে গ্রাহক ও মার্চেন্টদের প্রায় ১১৬ কোটি হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানিয়েছ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডি।
সংস্থাটি জানায়, প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ ছয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে টাকা পাচারের সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছেন তারা। তাদের মধ্যে দুজন দেশের বাইরে চলে গেছেন। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
তদন্ত সূত্রে জানা যায়, ই-কমার্স সাইট ‘ধামাকা’ বিভিন্ন পণ্যের লোভনীয় অফার ও ভার্চুয়াল সিগনেচার কার্ড বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৮০৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।
টাকাগুলো ওই তিনটি ব্যাংকে জমা রাখে। দীর্ঘ তিন মাস তাদের সন্দেহজনক লেনদেন নিয়ে তদন্ত করে সিআইডি। প্রাথমিক তদন্ত শেষে বনানী থানায় মামলা করে সংস্থাটি।
ধামাকার গ্রাহক ও মার্চেন্টদের টাকা সরিয়ে ফেলা ওই ছয় ব্যক্তি হচ্ছেন- ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জসীম উদ্দিন চিশতি, তার স্ত্রী ও একই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সাইদা রোকসানা খানম, তাদের ছেলে ইনভ্যারিয়েন্ট টেকনোলজির চেয়ারম্যান তাশফিক রেদোয়ান চিশতি, প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজিম উদ্দীন আসিফ, পরিচালক মাশফিক রেদোয়ান চিশতি ও পরিচালক (অপারেশন্স) সাফওয়ান আহমেদ।
ওই অনিয়মের সঙ্গে ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. এম আলীর সংশ্লিষ্টতার বিষয়েও অভিযোগ রয়েছে সিআইডির কাছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
সিআইডির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ধামাকার শীর্ষ কর্তাদের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হয়েছে, তাদের উদ্দেশ্যই ছিল প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়া। এ কারণে তারা প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো লাইসেন্স করেননি।
ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম, নাটক ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্পন্সরের মাধ্যমে ‘ধামাকা’ নামটি প্রতিষ্ঠা করেন তারা। ভেবেছিলেন, এ কৌশলে অনিয়ম করলেও তাদের কেউ আইনি জটিলতায় ফেলতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন, আমরা ধামাকার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, গ্রাহক ও মার্চেন্টদের সঙ্গে কথা বলে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছি। যেহেতু তারা ধামাকার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তাই তাদের বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে।
১১৬ কোটি টাকার মধ্যে কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি। যুক্তরাষ্ট্রের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জসীম উদ্দিন চিশতি টাকাগুলো পাঠিয়েছেন। তিনি এবং তার স্ত্রী বর্তমানে সেখানে অবস্থান করছেন। পাচার হওয়া বাকি অর্থের হদিস এখনও পাওয়া যায়নি।
২০২০ সালে বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করে ধামাকা।
শুরু থেকেই প্রতিটি পণ্যে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ ডিসকাউন্ট দেয় প্রতিষ্ঠানটি। গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা আদায় করে দীর্ঘদিন পণ্য না দেওয়ার অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। এছাড়া, না দেওয়া পণ্যের রিফান্ডের টাকাও ফেরত দেয়নি ধামাকা।