ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক
বাংলাদেশের ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল, অসহায় জনগোষ্ঠীর জন্য আরও ৫ লাখ ৮৭ হাজার ৪১৭। এসব পরিবারের জন্য আবাসনের লক্ষ্যে ১৪ হাজার ৬২০টি নতুন ব্যারাক নির্মাণ করবে সরকার। প্রকল্পের আওতায় ৫ হাজার ১৪৯টি পাকা ব্যারাক, চরাঞ্চলে ৫ হাজার ৭৮টি ও দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ৪ হাজার ৩৯৩টি সেমিপাকা ব্যারাক নির্মাণ করা হবে।
চলমান ‘আশ্রয়ণ-২ (চতুর্থ সংশোধিত) প্রকল্পের সময়-ব্যয় বাড়িয়ে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। চলতি সময় থেকে ২০২৪ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। নতুন করে প্রকল্পের প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার মানবিক সরকার। দেশের ভূমিহীন মানুষকে ঘর দেওয়ার মহাউদ্যোগ নিয়েছেন। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবে আরও মানুষকে ঘর দেওয়া হবে। যাদের জমি নেই, ভূমি নেই সেসব ভূমিহীন মানুষকে ঘর দিচ্ছে সরকার। অনেকে চায়ের কাপে নানা কথা বলে ঝড় তোলেন। কিন্তু বাস্তবতা অনেক কঠিন। সেই বাস্তবতার সামনে দাঁড়িয়ে গৃহহীন পরিবারের কথা চিন্তা করছে সরকার।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পটি চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এমন উদ্যোগ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদনের পর জুন ২০২৪ পর্যন্ত মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। চিহ্নিত পরিবারগুলোকে আবাসন দিতে বাড়তি ব্যয় হবে ৭ হাজার ৫৩৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
প্রকল্পটি নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়। সভায় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, বাসস্থান মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর অন্যতম। একটি নিজস্ব গৃহের মালিকানা মানুষের আজন্ম লালিত স্বপ্ন। প্রকৃতপক্ষে অসহায় ব্যক্তি, যার তিনবেলা আহার জোটানোই অনিশ্চিত তার পক্ষে একটি নিজস্ব বাসগৃহের আকাঙ্ক্ষা দিবাস্বপ্নের মতো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ভূমিহীন হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর বাসগৃহের মালিকানার স্বপ্নপূরণে তার সহৃদয়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এর উৎকৃষ্ট নিদর্শন।
‘এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভূমিহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠী প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত ডিজাইন অনুযায়ী নির্মিত একটি আবাসনের মালিক হবেন। একই সঙ্গে ঋণ ও আয়বর্ধক কর্মসূচির মাধ্যমে সুযোগ পাবেন পরিবারের জীবিকা নির্বাহের। প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব চিন্তাপ্রসূত এ পদক্ষেপ বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।’
১ হাজার ১১০টি কমিউনিটি সেন্টার, সব প্রকল্প-গ্রামে অভ্যন্তরীণ রাস্তা, ২০টি টং ও ৫৮০টি বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণ, প্রকল্প-গ্রামে অগভীর-গভীর নলকূপ স্থাপন, ৫৬৪টি ঘাটলা, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, বক্স কালভার্ট, পাকা ড্রেন ও স্লোপ প্রোটেকশন নির্মাণ।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রস্তাবিত চতুর্থ সংশোধনীতে জমি কেনা খাতে ৪০ কোটি টাকার সংস্থান ছিল। কিন্তু এ অর্থ অপর্যাপ্ত প্রতীয়মান হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে তৃতীয় সংশোধনীতে ১০০টি বহুতল ভবন নির্মাণখাতে মোট ৪৬২ কোটি ৩৯ লাখ ৭৮ কোটি টাকার সংস্থান ছিল। এ পরিপ্রেক্ষিতে জমি কেনা খাতের অর্থ সংস্থানের জন্য ওই ১০০টি বহুতল ভবনের মধ্যে ২০টি বহুতল ভবন কমানো হয়। ফলে সাশ্রয় করা ৮৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা জমি কেনা খাতে স্থানান্তর করে ৪০ কোটি টাকার স্থলে ১২৯ কোটি ৭০ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।
খবর: জাগোনিউজ