ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: চলতি (২০২১-২২) অর্থবছরের শুরু থেকেই নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন। এতে অব্যাহতভাবে বেড়েই চলেছে মূল্যস্ফীতির হার।
অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি) দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। আগের মাস সেপ্টেম্বরে যা ছিল ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এরও আগে আগস্টে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতির এ হার ছিল ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ। তবে অক্টোবরে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত উভয় খাতেই অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এ সূচক বেড়েছে।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৩ শতাংশে ধরে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। ২০২০-২১ অর্থবছরে এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে ওই অর্থবছর শেষ হয় ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি নিয়ে। অর্থাৎ বাজেটের লক্ষ্যের চেয়ে খানিকটা বেশি ছিল গড় মূল্যস্ফীতি।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে বাংলাদেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ২২ শতাংশ আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আগের মাস সেপ্টেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৫ দশমিক ২১ শতাংশ আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ।
অক্টোবর মাসে গ্রামাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে এ হার ছিল ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। অক্টোবরে শহরাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ।
বিবিএসের হালনাগাদ তথ্যে আরও দেখা যায়, অক্টোবর মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে গ্রামে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ, খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ। এ মাসে শহর এলাকায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৪ দশমিক ৩১ শতাংশ, আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতির হ্রাস-বৃদ্ধি পর্যালোচনায় পরিসংখ্যান ব্যুরো বলেছে, সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে চাল, আটা-ময়দা, চিনি, ব্রয়লার মুরগি, ডিম, পেঁয়াজ, সবজিসহ প্রায় সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দামই বেড়েছে।
এ বিষয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমাদের পরিসংখ্যান ব্যুরো মূল্যস্ফীতির যে তথ্য প্রকাশ করে, তার সঙ্গে বাজারের পণ্যমূল্যের বাস্তব প্রতিফলনের যথেষ্ট ঘাটতি থাকে বলে অনেকেই প্রশ্ন করেন। এক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য বিবিএসের বাস্তবভিত্তিক তথ্য প্রকাশের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা মাঠ পর্যায় থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করি। এখানে কোনো প্রশ্ন ওঠার কারণ নেই।