ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক
সৌদি আরব বাংলাদেশ থেকে আরও ১ টেরাবাইট ব্যান্ডউইথ নিতে চায়। বর্তমানে তারা ৬০০ জিবিপিএস (গিগাবিটস পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ নিচ্ছে। এছাড়াও বাংলাদেশের কাছ থেকে মালয়েশিয়া ২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
সরকার দেশের অব্যবহৃত ব্যান্ডউইথ রফতানি করতে আগ্রহী বলে বিএসসিসিএল সূত্রে জানাগেছে।
ভুটান বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ নিতে চায়। যেকোনও সময় সমঝোতা চুক্তি হবে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ আশাবাদী, ভুটান বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ নিলে নেপালও আগ্রহী হবে। চায়না টেলিকম, ফ্রান্সের অরেঞ্জ টেলিকমও বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে বিএসসিসিএল সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সৌদি আরব সাবমেরিন ক্যাবলের লাইফটাইম ধরে ব্যান্ডউইথ চায়। মালয়েশিয়া চায় ১০ বছরের জন্য। দুই পক্ষ সম্মত হলে চুক্তি হতে পারে। এজন্য মাস দুয়েক সময় প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সৌদি আরব, মালয়েশিয়া যে ব্যান্ডউইথ নিতে চায় তা আমাদের আন-ইউজড ক্যাপাসিটি, যাকে বলা হয় ‘ডার্ক ক্যাপাসিটি’। এই ক্যাপাসিটি ইনঅ্যাক্টিভ অবস্থায় রয়েছে, ওরা অ্যাক্টিভেট করে নেবে। আমাদের কিছুই করতে হবে না। সৌদি আরব এখন যা নিচ্ছে, আরও যা নিতে চায় এবং মালয়েশিয়া যে পরিমাণ ব্যান্ডউইথ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে তা নিলেও দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারে কোনও প্রভাব পড়বে না।
জানা যায়, সৌদি আরব ৬০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথের জন্য বাংলাদেশকে দিয়েছে ৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া প্রতি বছর রক্ষণাবেক্ষণ চার্জ বাবদ বাংলাদেশ পাবে ১ লাখ ২০ হাজার ডলার। চুক্তি হয়েছে সাবমেরিন ক্যাবলের লাইফটাইম হিসেবে। সেই হিসেবে চুক্তির মেয়াদ দাঁড়াতে পারে ২০ বছর।
প্রসঙ্গত, তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের (সি-মি-উই-৬)ক্যাপাসিটি হবে ১২ টিবিপিএস টেরাবাইটস পার সেকেন্ড)। ৬ টিবিপিএস সিঙ্গাপুর প্রান্তে, অবশিষ্ট ৬ টিবিপিএস ফ্রান্স প্রান্তে থাকবে। ফলে দেশে কোনও ব্যান্ডউইথের ঘাটতি থাকবে না। উদ্বৃত্ত ও অব্যবহৃত ব্যান্ডউইথ বিভিন্ন দেশে রফতানির সুযোগ থাকছে।
বাংলাদেশ বর্তমানে দুটি সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে সংযুক্ত, সি-মি-উই-৪ এবং সি-মি-উই-৫। অবস্থানগত ও অঞ্চল ভিত্তিতে সাবমেরিন ক্যাবলের দুটি অংশ- পূর্ব ও পশ্চিম। পূর্ব অংশই বাংলাদেশের বেশি কাজে লাগে। এই অংশে সিঙ্গাপুরের অবস্থান। দেশটি এশিয়ার বিজনেস হাব হিসেবে পরিচিত। ফেসবুক, গুগল ও ইউটিউবের ডাটা সেন্টার সিঙ্গাপুরে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ট্রাফিক সিঙ্গাপুর দিয়েই যায়। ফলে পূর্ব অংশটি বহুল ব্যবহৃত হলেও পশ্চিমাংশের ব্যান্ডউইথ পুরোপুরি অব্যবহৃত থাকে। যার পরিমাণ ২ দশমিক ৫ টিবিপিএস (টেরাবাইটস পার সেকেন্ড)। অথচ এই ব্যান্ডউইথ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারকে প্রতি বছর বিশাল অংকের অর্থ ব্যয় করতে হয়। এসব কারণে সরকার পশ্চিমাংশের অব্যবহৃত ব্যান্ডউইথ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পশ্চিমাংশের দেশগুলোরও আগ্রহ রয়েছে বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ নেওয়ার।