ঢাকা, ২৫ মার্চ বুধবারঃ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (কার্যক্রম), তাহমিনা বেগম স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি হতে জানা গেছে। গতকাল রোববার প্রধান কার্যালয়, বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ের ৫৯ জন কর্মকর্তার নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর, চট্টগ্রাম মহানগর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, শরীয়তপুর, মানিকগঞ্জ, নেত্রকোণা, ফেনী, নোয়াখালী, রাজশাহী, পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, খুলনা, মাগুরা, ঝিনাইদহ, যশোর, কুষ্টিয়া, বাগেরহাট, বরিশাল, পটুয়াখালী, রংপুর, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ-এ বাজার তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
কর্মদিবসের শুরুতেই সকাল ৯:১৫ টা থেকে ১০:০০ টা পর্যন্ত অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা এবং ঢাকা বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তাগণের সমন্বয়ে দিনের কর্মপন্থা নির্ধারণ সংক্রান্ত সভা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের আলোকে ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক (উপসচিব) জনাব মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক জনাব মোঃ মাসুম আরেফিন, জনাব বিকাশ চন্দ্র দাস, সহকারী পরিচালক জনাব ফাহমিনা আক্তার, জনাব ও মোঃ মাগফুর রহমান এর নেতৃত্বে রমনা, রামপুরা, মালিবাগ ও তেজগাঁও এলাকায় বাজার তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তদারিককালে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয় এবং বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি কম পরিলক্ষিত হয়। এ সময় বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে সম্মানিত ক্রেতা/ভোক্তা সাধারণকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়/সংগ্রহ না করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়। একইসাথে সম্মানিত পাইকারি ব্যবসায়ী এবং খুচরা ব্যবসায়ীবৃন্দকেও গ্রহণযোগ্য মূল্যে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য অনুরোধ করা হয়।
বাজার তদারকিকালে পণ্যের মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করার অপরাধে ঢাকা মহানগর এলাকাতে অবস্থিত ‘স্বদেশ বাণিজ্যালয়’ কে ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা, পণ্যের মোড়কে এমআরপি লেখা না থাকার অপরাধে ‘শরীফ হার্ডওয়ার’ কে ১,০০০/- (এক হাজার) টাকা, ধার্য্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রির অপরাধে ‘রহিম স্টোর’, ‘সামাদ স্টোর’, ‘মেসার্স মক্কা ট্রেডার্স’, ‘তানভির ডিমের আড়ৎ’, ‘লন্ডন এক্সক্লুসিভ’, ‘বেবী ফুডস এন্ড কসমেটিকস’ কে যথাক্রমে ৫,০০০/- (পাঁচ হাজার) টাকা, ২,০০০/- (দুই হাজার) টাকা, ১,০০০/- (এক হাজার) টাকা, ৫,০০০/- (পাঁচ হাজার) টাকা, ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা, ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা, প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করার অপরাধে ‘ভূইয়া স্টোর’ কে ৩,০০০/- (তিন হাজার) টাকা জরিমানা করা হয়। অর্থাৎ গত ২৪ মার্চ ২০২০ তারিখে বিভিন্ন অপরাধে সর্বমোট ৫৭,০০০/- (সাতান্ন হাজার) টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়।
এছাড়া দেশব্যাপী ৫২টি বাজার তদারকি কার্যক্রমের মাধ্যমে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য পণ্য তৈরি, পণ্যের মোড়কে এমআরপি লেখা না থাকা, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বা ঔষধ বিক্রয়, খাদ্য পণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ, প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করা, ভেজাল পণ্য বা ঔষধ বিক্রয়, বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্রের কারচুপি, ধার্য্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রয়, সেবা গ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্নকারী কার্যকলাপ, ওজনে কারচুপি, সেবা প্রদানে অবহেলা ইত্যাদি দ্বারা সেবাগ্রহীতার অর্থ, স্বাস্থ্য, জীবনহানি ইত্যাদি ঘটানো এবং পণ্যের মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করার অপরাধে ১১১টি প্রতিষ্ঠানকে ৩,৭২,০০০/- (তিন লক্ষ বাহাত্তর হাজার) টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।
অন্যদিকে লিখিত অভিযোগ নিষ্পত্তির মাধ্যমে ধার্য্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রি ও প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করা অপরাধে ৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় এবং ৪ জন অভিযোগকারীকে জরিমানার ২৫% হিসেবে ১২,৫০০/- (বারো হাজার পাঁচশত) টাকা প্রদান করা হয়।
গতকাল ২৪ মার্চ, সর্বমোট ৫৯টি বাজার তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা ও ৪টি লিখিত অভিযোগ নিষ্পত্তির মাধ্যমে ১২৪টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৪,৭৯,০০০/- (চার লক্ষ উনআশি হাজার) টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটলিয়ন, সিভিল সার্জন, মৎস্য কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, বাজার কর্মকর্তা, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর, শিল্প ও বণিক সমিতির প্রতিনিধি এবং ক্যাবের সদস্যগণ এসব তদারকি কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান করেন। তদারকিকালে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জনগণের মাঝে লিফলেট ও প্যাম্পফ্লেট বিতরণ করা হয়েছে।