টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকটি টয়লেট ভেঙে নির্মাণ করা হয়েছে ১৩ কক্ষ বিশিষ্ট মার্কেট ভবন। এর জন্য ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে সদ্য নির্মিত বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বেষ্টনীও (বাউন্ডারি) ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক লাল মাহমুদ প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে ম্যানেজিং কমিটির নাম ভাঙিয়ে এসব করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।অনুমতি ছাড়া সরকারি অর্থে নির্মিত স্থাপনা ভেঙে বাণিজ্যিক অবকাঠামো নির্মাণের বিধান নেই জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
এছাড়া বিদ্যালয় খোলার পর শিক্ষার্থীদের পয়ঃনিষ্কাশনের অসুবিধাসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিঘ্নিত নিয়ে চিন্তিত অভিভাবক ও স্থানীয়রা এবং বিদ্যালয়ে একটি গেট ও নিরাপত্তা বেষ্টনী (বাউন্ডারি) নির্মাণের জন্য ১০ লাখ টাকার বরাদ্দ দেয় জেলা পরিষদ। এর কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাজেশ এন্টারপ্রাইজ। সাব ঠিকাদার হিসেবে বাউন্ডারি ওয়ালের কাজ করেন বিদ্যালয়ের কোয়াব সদস্য খন্দকার আহম্মদ শাহ মোয়াজ্জিন। তবে ওই বাউন্ডারি ওয়াল ও গেট নির্মাণেও রয়েছে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ। প্রায় ৭ মাস আগে বাউন্ডারির কাজ শেষ করা হয়।
করোনায় বন্ধ থাকার সুযোগে নিরাপত্তা বেষ্টনীর ভেতরে তৈরি করা হয়েছে শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সদস্য ও বহিরাগতদের জন্য ১৩টি বাণিজ্যিক স্থাপনা। যা চালু করতে এরইমধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে ছাত্রীদের পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য সেকায়েপ প্রকল্পের নির্মিত টয়লেটগুলো।
কয়েকমাস আগে বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এখন ভেতরে দেখছি মার্কেট নির্মাণ হচ্ছে। মার্কেটের জন্য এবার বাউন্ডারিটি ভেঙে ফেলা হবে জানান স্থানীয় এক ব্যক্তি।
করোনাকালে যখন স্থবির শিক্ষা ব্যবস্থা আর সেই সুযোগ আর জেনে বুঝেই অপচয় করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় এই অর্থ। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক টাকা উপার্জনের জন্য সরকারিভাবে নির্মিত স্থাপনা ভেঙে বিদ্যালয়ে মার্কেট নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির কয়েকজন সদস্য জানান, প্রধান শিক্ষকের নামেও দোকান বরাদ্দ রয়েছে। মার্কেট নির্মাণের জন্য টয়লেট ভাঙা হয়েছে। এরপর বাউন্ডারি ভাঙা হবে। এতে বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি বহিরাগতদের উৎপাত বেড়ে যাবে। তারা আরও বলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তার একক ক্ষমতাবলে আর প্রশাসনের কোনো অনুমতি না নিয়েই বিদ্যালয়ের ভেতর মার্কেট নির্মাণ করছেন।
প্রধান শিক্ষক লাল মাহমুদ মিয়া বলেন, ‘বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য টয়লেট ও বাউন্ডারিসহ যেসব স্থাপনা রয়েছে সেগুলো ভাঙার জন্য ম্যানেজিং কমিটির অনুমতি রয়েছে। মার্কেটের দোকানগুলো বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও বহিরাগতদের মধ্যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যারা দোকান বরাদ্দ নিয়েছে তাদের টাকা দিয়েই মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে সেই টাকা জামানত হিসেবে থাকবে।’
ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ইশরাত জাহান বলেন, ‘বিদ্যালয়ের সরকারি স্থাপনা বা ছাত্রীদের জন্য নির্মিত টয়লেট ভাঙার জন্য কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। যদি স্থাপনা ভেঙে মার্কেট নির্মাণ করা হয় তাহলে ওই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’