ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: দেশের বাজারে গতকাল শনিবারও সয়াবিন ও পাম অয়েলের পর্যাপ্ত সরবরাহ দেখা যায়নি। খুচরা বিক্রেতারা (মুদি দোকানদার) জানিয়েছেন, গতকাল পর্যন্ত পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো থেকে চাহিদা অনুযায়ী তেল পাওয়া যায়নি। তবে আজ বা আগামীকালের মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছেন তারা।
গতকাল রাজধানীর বাসাবোর রকমারি বিপণিবিতানের মালিক প্রণব কুমার বলেন, গত বৃহস্পতিবার তেলের নতুন দাম নির্ধারণের পর কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেছেন। শনিবার পর্যন্ত কোনো কোম্পানিই তাদের এলাকায় তেল নিয়ে আসেনি। কোম্পানির প্রতিনিধিরা রোববার বা সোমবার তেল দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। একই অবস্থা মালিবাগ, শান্তিনগর এলাকার দোকানগুলোতেও।
এদিকে, সরবরাহ সংকটের সুযোগ নিচ্ছেন কোনো কোনো ব্যবসায়ী। তারা নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দরে সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন। এমনকি সরিষা, সূর্যমুখী তেলও বিক্রি হচ্ছে বেশি দরে। এ ছাড়া রাইস ব্রান অয়েলের পাঁচ লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত।
সরবরাহের বিষয়ে জানতে চাইলে মেঘনা গ্রুপের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার তসলিম শাহরিয়ার বলেন, কোনো কোম্পানি ইচ্ছা করে সরবরাহ কমায়নি। ঈদের ছুটি, সাপ্তাহিক ছুটির কারণে নতুন দাম নির্ধারণের পর সরবরাহ হতে সময় লেগেছে। শনিবার তাদের কারখানায় পুরোদমে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কিছু তেল সরবরাহও করা হয়েছে। আজ (রোববার) থেকে পুরোদমে সরবরাহ করা হবে।
এদিকে, বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বিশেষ সভা ডেকেছে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, তেলের সরবরাহ যাতে স্বাভাবিক থাকে, সে জন্য কোন কোম্পানির কাছে কতটা মজুত আছে এবং সরবরাহ কতটা করা হচ্ছে, সে বিষয়ে তথ্য নেওয়া হবে। যদি কোথাও কোনো সমস্যা থাকে, সেগুলো সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
গত ৫ মে নতুন করে সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম রেকর্ড পরিমাণে বাড়িয়ে নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ৪৪ টাকা আর বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৩৮ টাকা বাড়ানো হয়। আর পাম অয়েলের দাম লিটারে ৪২ টাকা বাড়ানো হয়েছে। দেশের ইতিহাসে যা রেকর্ড। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও ব্যবসায়ীদের নতুন দরে সম্মতি দিয়েছে। এখন থেকে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল কিনতে হবে ১৮০ টাকায়। আর সয়াবিন তেলের এক লিটারের বোতলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯৮ টাকা। পাঁচ লিটারের বোতলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৮৫ টাকা। আর প্রতি লিটার পাম অয়েলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭২ টাকা। কিন্তু দাম বাড়ানোর পরও গতকাল পর্যন্ত বাজারে চাহিদা অনুযায়ী তেল পাওয়া যাচ্ছে না।