একের পর এক মিথ্যা মামলার মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সিদ্ধহস্ত। অর্থের বিনিময়ে মামলা করাই তার প্রধান কাজ। টাকার বিনিময়ে অন্যের হয়েও মামলা করতে পারদর্শী তিনি। অভিনব এই প্রতারকের নাম আজিজুল হক পাটোয়ারী। দেশের বিভিন্ন আদালত ও থানায় তিনি প্রায় শতাধিক মিথ্যা মামলা করেছেন। তাকে গ্রেফতারের পর পুলিশ বলছে, সারাদেশে তার রয়েছে একটি মামলাবাজ সিন্ডিকেট।
পুলিশ জানায়, চাঁদপুরের আজিজুল একজন মামলাবাজ। সম্প্রতি এক ভুক্তভোগী নারীর করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিজের কিংবা অন্যের প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে তিনি দেশব্যাপী তৈরি করেছেন মামলাবাজ সিন্ডিকেট। চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় তার করা মামলায় অসংখ্য নিরপরাধ মানুষ হয়রানির পাশাপাশি জেলও খেটেছেন।
মনির হোসেন, ইমান হোসেন আর মনোয়ারা বেগমের জীবনে থানা, পুলিশ আর আদালত মিলেমিশে একাকার। তাদের কারও বিরুদ্ধে পাঁচটি, কারও আটটি, কারও আবার ১২টি মামলা রয়েছে। একটি মামলায় জামিন পেতে না পেতেই আরেকটি মামলার খড়গ। চাঁদপুরের শাহরাস্তী থানা থেকে ঢাকার সিএমএম কিংবা দায়রা জজ আদালতে তাদের জীবন আটকে আছে গেল কয়েক বছর ধরে। তাদের অভিযোগ তারা মিথ্যা মামলার শিকার। আর এসব মামলার বাদী আজিজুল হক পাটোয়ারী নামের এক ব্যক্তি। ভুক্তভোগী মনোয়ারা বেগম বলেন, তার হাতে ২০০ মানুষ নির্যাতিত হয়েছেন।
উনার গ্রামে চারজন মানুষ মামলা খেয়ে বেঁচে গেছেন। ভুক্তভোগী মনির হোসেন বলেন, আমার নামে ও বেনামে ২৫টি মামলা করেছেন। এর মধ্যে ঢাকা সিএমএম কোর্টে চারটি করেছেন।
পুলিশ বলছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা, এমপি-মন্ত্রীর খাস লোক পরিচয় দিয়ে এলাকার মানুষকে হয়রানির পাশাপাশি পান থেকে চুন খসলেই মামলা ঠুকে দেন তিনি। এখন পর্যন্ত শতাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, মানুষকে হয়রানি করার জন্য মামলাগুলো করে থাকেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে ভাড়াটে হিসেবে কাজ করেন। এখন পর্যন্ত সে ১০০টি মামলার বাদী হয়েছেন।
ভাড়ায় অর্থাৎ অন্যের হয়ে মামলাও আজিজুল সিদ্ধহস্ত। প্রতিটি মামলার সাক্ষী কখনো সে নিজে, কখনো তার ছেলে, ভাতিজা অথবা ছোট ভাই।
সূত্রঃ সময় নিউজ