নিজস্ব প্রতিবেদক:
মুখরোচক খাবার তৈরি করে ক্রেতাদের দেয়ার জন্য মাংস প্রস্তুত করে ফ্রিজে রাখা হয়েছে। মাংসের বক্সে উৎপাদন মেয়াদ দেয়া রয়েছে ১২ জানুয়ারি ২০২২ এবং মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ দেয়া রয়েছে ২০ জানুয়ারি ২০২২। মেয়াদ উত্তীর্ণের তিন পরেও সেই মাংস বক্স সহ ফ্রিজের মধ্যেই রাখা হয়েছে।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে ‘জিনজিয়ান’ রেস্টুরেন্টে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখতে পায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
রোববার (২৩ জানুয়ারিতে) নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে ‘জিনজিয়ান’ রেস্টুরেন্টে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
এসময় রেস্টুরেন্টটির ফ্রিজে মেয়াদ উত্তীর্ণ মাংস পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে আমদানীকারকদের সিল ছাড়াই বিদেশি পণ্য ক্রয় এবং ব্যবহার, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) অনুমোদন ছাড়াই পণ্য উৎপাদন এবং ভোক্তাদের মাঝে বিক্রির অপরাধে অধিদপ্তরের ৪৩ ধারায় ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। নগদে সেই টাকা আদায় করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৪৩ ধারায় বলা হয়েছে:
অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ: মানুষের জীবন বা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি হয় এমন কোন প্রক্রিয়ায়, যা কোন আইন বা বিধির অধীনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, কোন পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ করা হলে অনুর্ধ্ব দুই বছরের কারাদণ্ড বা অনাধিক এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
পরে মিরপুর রোডের ক্লিয়ার ভিশন ফার্মেসীতে অভিযানে যায় ভোক্তা কর্মকর্তারা। এসময় ফার্মেসীতে কয়েক প্রকারের মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া যায়। এই প্রতিষ্ঠানটিকে অধিদপ্তরের ৩৭ ধারায় ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। নগদে সেই টাকা আদায় করা হয়। এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ জব্দ করা হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৩৭ ধারায় বলা রয়েছে:
পণ্যের মোড়ক, ইত্যাদি ব্যবহার না করা: কোন আইন বা বিধি দ্বারা কোন পণ্য মোড়কাবদ্ধভাবে বিক্রয় করার এবং মোড়কের গায়ে সংশ্লিষ্ট পণ্যের ওজন, পরিমাণ, উপাদান, ব্যবহারবিধি, সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয় মূল্য, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেটজাতকরণের তারিখ ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ স্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করার বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করলে অনুর্ধ্ব এক বছরের কারাদণ্ড বা অনাধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
পরে নিত্যপণ্যের বাজার পরিদর্শন করে চাল, চিনি,পেঁয়াজ, কাঁচা সবজি, পোল্ট্রি, ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য, পণ্য ক্রয়-বিক্রয় রসিদ, পণ্যের মূল্য তালিকা পযবেক্ষণ করা হয়। এসময় বাজারে ন্যায্যমূল্যে নিত্যপণ্য বিক্রয়, পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের রসিদ সংরক্ষণ, মূল্য তালিকা প্রদর্শনের বিষয়ে ব্যবসায়ীদের হ্যান্ডমাইকে সতর্ক করা হয়।
ঢাকা মহানগরীতে অধিদপ্তরের ৩টি টিম কর্তৃক অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল এবং ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (মেট্রো) মো. মাগফুর রহমান।
আরইউ