আব্দুল কাদের নামের এক ভুক্তভোগী যার কাছ থেকে প্রতারক চক্র তাঁর ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের আশুলিয়া শাখার হিসাব থেকে ১ লাখ ৪৮ হাজার ২৯০ টাকা সরিয়ে নেয়।
গভীর রাতে মোবাইল ফোনে আসা কলে কাঁচা ঘুম ভাঙে আবদুল কাদেরের। অচেনা নম্বর, অজানা আশঙ্কা। তবু ফোন ধরেন তিনি। ওপাশ থেকে বলা হয়, ‘আপনার রকেট অ্যাকাউন্টে সমস্যা, এখনই বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা একটি পাঁচ ডিজিটের নম্বর দিচ্ছি। সেই নম্বরের সঙ্গে মিলিয়ে আপনার কাছে যাওয়া কোড নম্বরটি দ্রুত বলুন।’ ঘুমের ঘোরেই তিনি কোড নম্বর দেন। ঘোর কাটতেই বুঝতে পারেন তাঁর ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের আশুলিয়া শাখার হিসাব থেকে ১ লাখ ৪৮ হাজার ২৯০ টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
প্রতারণার শিকার হওয়া অন্য সব সাধারণ মানুষের মতো হাল ছাড়েননি আবদুল কাদের। তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে এমন ১৪টি চক্রের হদিস, যাদের পরিচিত নাম ‘ওয়েলকাম পার্টি’। আর এদের পেছনে থাকা স্থানীয় একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার নাম।
আশুলিয়ার মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির উপপরিদর্শক (এসআই) মজিবুর রহমান জানান, ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কামাল বয়াতিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর সহযোগী রিয়াদ ও নুরুজ্জামানকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল ও ভাঙ্গা উপজেলার কয়েকটি প্রতারক চক্রের নাম পুলিশের কাছে স্বীকার করেন।
গ্রেপ্তার হওয়া তিন আসামি আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনজনের একজন তাঁর স্বীকারোক্তিতে এই প্রতারণার মদদদাতা হিসেবে ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক দীপক মজুমদারের নাম বলেন। তবে তিনি কীভাবে জড়িত, তার বিস্তারিত বিবরণ জবানবন্দিতে উল্লেখ নেই।