ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক
রাজধানীতে প্রতিদিন গড়ে ছয় শতাধিক যানবাহনকে মামলা দেওয়া হচ্ছে। মোটরসাইকেল চালকদের এই গ্যাঁড়াকলে পড়তে হচ্ছে বেশি। বর্তমান সড়ক পরিবহন আইনে জরিমানা বেড়ে গেছে, এ কারণে তাদের ওপর যেন অনেকটা মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুরো চিত্র।
ডিএমপি’র লালবাগ ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মেহেদি হাসান বলেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইন অনুযায়ী কাজ করছি আমরা।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত ১ লাখ ৭২ হাজার ৯৬১টি মামলা করা হয়েছে, যার জরিমানা আসে ৩৯ কোটি ২৯ লাখ ৫৩ হাজার ৭২৫ টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮৬০টি মামলা থেকে আদায় করা জরিমানা পরিমাণ ৩২ কোটি ১১ লাখ ৮৯ হাজার ৮৬১ টাকা। গত আগস্টে রাজধানীজুড়ে ১৯ হাজার ২১৪টি মামলা হয়। জুলাইয়ে এই সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ১৪২টি। জুনে রাজধানীতে মামলা হয় ২৫ হাজার ১০৫টি। মে মাসে তা ছিল ১৩ হাজার ৯০৬টি। এর আগে এপ্রিলে ২০ হাজার ৫৫৯টি, মার্চে ২৪ হাজার ৭৪৯টি, ফেব্রুয়ারিতে ২৫ হাজার ১২৫টি এবং জানুয়ারিতে ২৫ হাজার ১৬১টি মামলা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট স্বীকার করেছেন, মোটরসাইকেলে তুলনামূলক মামলা দেওয়া হয় বেশি। এর কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেন তিনি। মোটরসাইকেলে কেউ হেলমেট ছাড়া থাকলে দূর থেকে তা বোঝা যায়, এ কারণে মামলা হজম করতে হয় অনেককে। এখনও অনেকের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায় না এবং কাগজপত্রে অনেক ধরনের ত্রুটি থাকে এমনকি কারও কারও কাছে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র পর্যন্ত থাকে না। এছাড়া সিগন্যাল অমান্য করে হুটহাট চলে যাওয়াসহ অনেকের মধ্যে আইন মেনে না চলার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।
ট্রাফিক সার্জেন্টরা লক্ষ্য করেছেন, অনেক ক্ষেত্রে প্রাইভেটকারের কাগজপত্র ও ফিটনেস সনদ আপডেট পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে মোটরসাইকেল চালকদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে।
মোটরসাইকেল চালকেরা এখন বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অবস্থান করেন। তাদের অনেকেই চুক্তিতে যাত্রী পরিবহন করছেন। এতে করে পুরো ভাড়া নিজের পকেটে রাখা যায়। কারণ অ্যাপভিত্তিক ব্যবস্থাপনায় থাকলে সেই প্রতিষ্ঠানকে ভাড়ার ভাগ দিতে হয়। এ কারণে রাজধানীতে অদক্ষ চালকের সংখ্যা বেড়েছে।
লালবাগ ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মেহেদি হাসান আরো বলেন, রাজধানীজুড়ে মোটরসাইকেল চালকদের বেশিরভাগই অনেক ক্ষেত্রে আইন মানতে চায় না। তাদের মধ্যে সিগন্যাল অমান্য করে দ্রুত চলে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। এসব কারণেই কিন্তু মামলা করা হয়। আর যা কিছু হচ্ছে, আইনের মধ্যে হচ্ছে।’
ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘ট্রাফিক বিভাগের মামলা থেকে পাওয়া জরিমানার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা পড়ে। এখানে পুলিশ সদস্যদের কোনও লাভ নেই। সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখার মতো সরকারি দায়িত্ব পালনে আমরা মাঠে আছি।’
খবর: বাংলা ট্রিবিউন