ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:
২০ এমবিপিএস (মেগাবিটস পার সেকেন্ড) বা তার বেশি গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগকে ব্রডব্যান্ড হিসেবে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। এ কারণে পরিবর্তন হবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সংজ্ঞা পাশাপাশি বৃদ্ওধি পাবে গতিও। বিটিআরসির সর্বশেষ কমিশন বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ব্রডব্যান্ডের নতুন গতি ও সংজ্ঞা অনুমোদন দিয়েছে।
আর এরই সঙ্গে সংশোধন হতে যাচ্ছে জাতীয় ব্রডব্যান্ড নীতিমালা। দেশে জাতীয় ব্রডব্যান্ড নীতিমালা প্রণয়ন করা হয় ২০০৯ সালে। প্রায় এক যুগ পরে এই নীতিমালা হালনাগাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এর পাশাপাশি জাতীয় ব্রডব্যান্ড নীতিমালা ২০২৩-এর খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, এখন ব্রডব্যান্ডের গতি হবে ২০ এমবিপিএস বা তার চেয়ে বেশি। দেশে এখন যে পরিমাণ ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হয় তাতে করে ব্রডব্যান্ডের গতি ১০ এমবিপিএস থাকা উচিত নয়। ফলে এটি বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, মোবাইল ইন্টারনেট হলো সাময়িক সমাধান। ব্রডব্যান্ডই আসল। আমাদের এতে ফিরতেই হবে।
জানা গেছে, ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে ৬ বার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি পরিবর্তন হয়েছে। ২০০৮ সালে যা ছিল ১২৮ কেবিপিএস, ২০১১ সালে ৫১২ কেবিপিএস, ২০১৩ সালে ১ এমবিপিএস, ২০১৫ সালে ২ এমবিপিএস, ২০১৬ সালে ৫ এমবিপিএস এবং ২০১৮ সালে ১০ এমবিপিএস গতি নির্ধারণ করে ব্রডব্যান্ডের সংজ্ঞা ঠিক করা হয়। গতি এর নিচে থাকলে তাকে ন্যারোব্যান্ড বলে অভিহিত করা হয়। ২০২১ সালের জন্য ব্রডব্যান্ডের গতি ঠিক করা হয় ২০ এমবিপিএস।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১২ অক্টোবর তারিখে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বিটিআরসির সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ইন্টারনেটের স্বল্প গতির ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং ব্রডব্যান্ডের গতি বৃদ্ধির জন্য জাতীয় পর্যায়ে ব্রডব্যান্ডের সংজ্ঞা নতুন করে নির্ধারণ করার ব্যাপারে তার মতামত ব্যক্ত করেন। তিনি বর্তমান গতিকে ১০ এমবিপিএসকে ৩০ এমবিপিএসে উন্নীত করার বিষয়ে মত ব্যক্ত করেন। সে সময় বৈঠক থেকে তাকে জানানো হয়, জাতীয় ব্রডব্যান্ড নীতিমালা ২০২১ প্রণয়নের ব্যাপারে গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে। পরবর্তী সময়ে বিটিআরসির সর্বশেষ কমিশন বৈঠকে ব্রডব্যান্ডের সংজ্ঞা ২০ এমবিপিএস করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।
জাতীয় ব্রডব্যান্ড নীতিমালা-২০২১ প্রণয়নের ব্যাপারে বলা হয়েছে, সময়ের পরিক্রমায় দৈনন্দিন জীবনে যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন প্রযুক্তি। এর মধ্যে রয়েছে আইওটি, বিগ ডেটা, ক্রিপ্টোকারেন্সি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, টেলিমেডিসিন ও ওয়্যারলেস মেডিসিন, ই-লার্নিং, ই-কমার্স, মোবাইল আর্থিক সেবা। এসব সেবার বিকাশের ফলে গ্রাহক পর্যায়ে উচ্চগতির ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এ কারণেই ২০০৯ সালের ব্রডব্যান্ড পলিসি সংশোধন করে ২০২১ প্রণয়ন করা হচ্ছে।