আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন অনেক বেশি সংক্রামক। একইসঙ্গে নতুন এই ভ্যারিয়েন্টটি টিকার কার্যকারিতাও অনেকটা কমিয়ে দেয়। এটি সামাজিক সংক্রমণে ওমিক্রন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকেও ছাড়িয়ে যাবে বলেও ফের সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণে খুব একটা মারাত্মক উপসর্গ দেখা যায়নি বলেও জানিয়েছে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার শীর্ষ এই সংস্থাটি।
ভারতে প্রথম শনাক্ত করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ধান পাওয়া ওমিক্রনে যে পরিমাণে পরিবর্তন দেখা দিয়েছে, তাতে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বিশ্বজুড়ে।
আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশগুলোর সঙ্গে বহু দেশ ইতোমধ্যেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। ওমিক্রনে লাগাম টানতে অভ্যন্তরীণ যাতায়াতের ওপরেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হচ্ছে। এরপরও বিশ্বের বহু দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে ওমিক্রন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বের ৬৩টি দেশে থাবা বসিয়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। এছাড়া ভাইরাসের এই ধরনের প্রকোপে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রিটেনে দ্রুতগতিতে সংক্রমণ ছড়াতে দেখা যাচ্ছে।
রোববার ডব্লিউএইচ’র পক্ষ থেকে সংক্ষিপ্ত বিবরণে বলা হয়েছে, ‘প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ থেকে বোঝা যাচ্ছে- করোনার সংক্রমণ এবং ছড়িয়ে পড়া রুখতে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সামাজিক সংক্রণের ক্ষেত্রে ওমিক্রন সম্ভবত ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকেও ছাড়িয়ে যাবে।’
এখন পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যারা ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের শরীরে কেবল ‘হালকা’ অসুস্থতা দেখা গিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আবার কোনো উপসর্গই নেই আক্রান্তদের। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, এই ভ্যারিয়েন্টটি ঠিক কতটা মারাত্মক হতে পারে, তা নিশ্চিত হতে আরও তথ্য প্রয়োজন।
এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার পরিচালক ড. পুনম খেত্রপাল জানিয়েছিলেন, একটি নতুন ভ্যারিয়্যান্ট সামনে আসা মানে এই নয় যে করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তবে ওমিক্রনের জন্য পরিস্থিতি অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
তার ভাষায়, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রন সংক্রমণ বাড়ছে। কিন্তু, আমাদের আরও তথ্যের প্রয়োজন। ডেল্টার চেয়ে ওমিক্রন দুর্বল কি না এই প্রসঙ্গে এখনও পর্যাপ্ত তথ্য নেই।’
উল্লেখ্য, গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথমবারের মতো ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপরই তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। একজন বিশেষজ্ঞ করোনার বি.১.১.৫২৯ নামক এই ভ্যারিয়েন্টকে ‘এ যাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।
এমনকি করোনার এই ধরন মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকেও আক্রমণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গ্রিক বর্ণমালার ১৫ নম্বর অক্ষর অনুযায়ী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভ্যারিয়েন্টকে ‘ওমিক্রন’ নাম দেয়।