ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:
হঠাৎ করেই ফ্লাইট বাতিল করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন এয়ারলাইন্সটির যাত্রীরা। বেশি ভোগান্তি মধ্যপ্রাচ্যগামী প্রবাসীদের। কারণ তারা ভিসা, পাসপোর্টের মেয়াদ হিসাব করেই ফ্লাইটের টিকিট কাটেন। বিমানের পাইলট ও কেবিন ক্রুদের করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিমান সূত্র।
বিমান সূত্রে আরও জানা গেছে, এর মধ্যে প্রায় ৬০ জন পাইলট এবং ৮০ জন কেবিন ক্রু করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। যে কারণে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না বিমান। পাইলট ও ক্রুদের ডিউটির শিডিউল মাসিক ভিত্তিতে করা হলেও এ পরিস্থিতিতে ৭২ ঘণ্টা আগে তাদের জানানো হচ্ছে ফ্লাইট শিডিউল। অতিরিক্ত কর্মঘণ্টায় কাজ করে চাপও বেড়েছে তাদের ওপর। অনেক রুটে ফ্লাইট শিডিউল বদলে যাচ্ছে বিনা নোটিশেই।
সৌদি প্রবাসী রাজিয়া এবং আজিমের মরদেহ দেশে পাঠানোর জন্য ৩ ফেব্রুয়ারি প্রস্তুতি নেয় সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস। নির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে সৌদি থেকে ফ্লাইটে মরদেহ দুটি পাঠানোর কথা। মৃতদের স্বজনদের ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে বিমানবন্দরে আসতে অনুরোধ জানায় দূতাবাস। কবর প্রস্তুত করে যথাসময়ে বিমানবন্দরে হাজির স্বজনরা।
কিন্তু মরদেহ মর্গ থেকে সৌদি আরবের বিমানবন্দরে নিয়েই বিপাকে পড়ে দূতাবাস। কারণ বিমানের পক্ষ থেকে জানানো হলো, ফ্লাইট বাতিল। ৬ তারিখ ফ্লাইট যাবে। মরদেহ বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে আনা হলো। পরে ৭ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরব থেকে লাশ নিয়ে আসে বিমানে।
মৃত আজমির শ্যালিকা শরিফা বলেন, ‘আমরা বাহ্মণবাড়িয়া থেকে সাত হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঢাকায় আসি। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর জানতে পারি, বিমান আসবে না। আমাদের মনের অবস্থাও ভালো না। টাকার কথা বাদই দিলাম, চার বছরের একটা ছেলে রেখে আমার দুলাভাই মারা গেছেন। আমার বোনসহ সবাই তার লাশ শেষবার দেখবে বলে অপেক্ষায় আছে।’
সৌদি প্রবাসীরা বলছেন, দাম্মাম থেকে সরাসরি ঢাকায় বিমান ফ্লাইট পরিচালনা করে। তবে ফ্লাইট শিডিউল ঠিক না থাকায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের। বিশেষ করে এ সময়ে করোনার পরীক্ষাসহ অন্যান্য বিধিনিষেধ মানার পর ফ্লাইট বাতিল হলেই বাড়ছে নানা ঝামেলা।
৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে ৪২ জনের একটি গ্রুপ নেপালে যায়। তাদের ফিরতি ফ্লাইট ছিল ৬ ফেব্রুয়ারি। তবে বিমান হুট করেই যাত্র্রীদের জানায় ৬ তারিখের ফ্লাইট বাতিল করে ১৩ ফেব্রুয়ারি নেওয়া হয়েছে। এতে ভ্রমণকারীরা বিপদে পড়ে যান। পরে বিমানের পক্ষ থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি ফ্লাইট দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। প্রশ্ন ওঠে, ওই সময় যাত্রীরা কোথায় থাকবেন? তাদের হোটেলের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করলেও সেটি করেনি বিমান। পরে বাধ্য হয়ে অন্য এয়ারলাইনের ফ্লাইটে নতুন করে ঢাকায় ফেরেন তারা।
এদিকে বিমানের পাইলট ও কেবিন ক্রুরা করোনায় আক্রান্ত হলে তাদের চিকিৎসা ব্যয় নিজেদের বহন করতে হচ্ছে। অতিরিক্ত কাজের চাপের পাশাপাশি এই চিকিৎসা নিয়েও হতাশ বিমানের কর্মীরা।